কলকাতা: গত শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর), টিটাগড়ের এক স্কুলের ছাদে একটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেফতার করেছিল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। উদ্ধার হয়েছিল আরও ১০টি তাজা বোমা। পুলিশের পক্ষ থেকে ত্রিকোন প্রেমের তত্ত্ব দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতেই ওই বোমা ছোড়া হয়েছিল। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এই ঘটনার এনআইএ তদন্ত দাবি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিলেন রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা যেভাবে ভেঙে পড়েছে, তাতে তিনি এই চিঠি লিখতে বাধ্য হয়েছেন।
চিঠিতে শুভেন্দু অধিকারী গত শনিবারের ঘটনার কথা জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, ওই বিস্ফোরণের ফলে স্কুটির শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেছেন, ঘটনার তদন্তের শুরু থেকেই ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ঘটনাটির গুরুত্ব কমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের কথা শুনে মনে হতে পারে, কোনও স্কুলের ছাদে বোমা বিস্ফোরণ নিয়মিত ঘটনা। যদি কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটত, তবেই তারা বিষয়টিকে গুরুতর বলে মনে করত।
শুভেন্দু অধিকারী আরও অভিযোগ করেছেন, এই ঘটনায় শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা জড়িত আছেন বলে, এই অপরাধটি অনন্য এবং একে বিরলতম ঘটনা বলে চিহ্নিত করা যেতে পারে। নয়তো টিটাগড়-সহ গোটা ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকাতেই বোমা মারা, সুপারি খুন, গুলি চালনার ঘটনা রোজই ঘটে চলে। দুষ্কৃতীরা নির্ভয়ে ঘুরে বেড়ায়, আর তাদের পক্ষে বোমা-গুলি হাতে পাওয়াটাও অত্যন্ত সহজ। পুলিশ এই ঘটনার পিছনে ব্যক্তিগত আক্রোশকে দায়ি করলেও, শুভেন্দু দাবি করেছেন, ঠিক কী কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে তা এখনও অজানা। পুলিশের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে এখনও কোনও নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, বেশ কয়েকটি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী পশ্চিমবঙ্গে ঘাঁটি গেড়েছে। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগণায় সক্রিয় রয়েছে তারা। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা ‘প্রতিবেশি দেশের নাগরিক’ বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। কাজেই এই ঘটনার পিছনে বড় কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছেন বিরোধী দলনেতা। অমিত শাহকে সলেখা চিঠিতে তিনি বলেছেন, এই ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখলে জাতীয় সুরক্ষার পক্ষে তা হবে হুমকির। তাই তিনি এই ঘটনার এনআইএ তদন্ত দাবি করেছেন।