কলকাতা: স্বাস্থ্য সাথী কার্ড (Swastha Sathi Card) রয়েছে এমন রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে বারবার। এবার সেই বিষয়েই হাসপাতালকে সতর্ক থাকার হঁশিয়ারি দিল স্বাস্থ্য কমিশন (Health Commission)। পাশাপাশি, জরিমানাও ধার্য করা হয়েছে। বেসরকারি ওই হাসপাতালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড রয়েছে এমন রোগী না ফেরানো হয়।
বেসরকারি হাসপাতাল (Private Hospital) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মোট সাতটি মামলার শুনানি ছিল আজ স্বাস্থ্য কমিশনে। এর মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে রোগী ফেরানোর অভিযোগ। অভিযোগ, চিরঞ্জিত সাহা নামে এক ব্যক্তিকে প্রথমে কর্পোরেট হাসপাতাল গোষ্ঠীর সল্টলেক শাখায় পাঠানো হয়। সেখানে বেড নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তাঁকে মুকুন্দপুরের হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নিয়ে গেলেও বেড নেই বলে জানানো হয়। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ১৫ শতাংশ বেডে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে রোগীর চিকিৎসা করা উচিৎ। কিন্তু কমিশনের বক্তব্য মুকুন্দপুরে ১৮০ শয্যার হাসপাতালে মাত্রা ৬ বেড স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
যদিও এখনও স্বাস্থ্য সাথীর জন্য কত বেড বরাদ্দ রাখতে হবে, তা ঠিক করে দেয়নি সরকার। তা সত্ত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যা স্থির করা দরকার বলে মনে করেন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান। এ ভাবে চিকিৎসা না করিয়ে রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগে হাসপাতালকে ৫ হাজার টাকার জরিমানা ধার্য করেছে স্বাস্থ্য কমিশন। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, রোগী অ্যাম্বুলেন্সে থাকায় চিকিৎসক দেখেননি তাঁকে। এ ছাড়াও বিল সংক্রান্ত অন্যান্য কিছু অভিযোগও ছিল এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য সোমবারই শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুনেছি, বহু বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিচ্ছে না। এমনটা হলে আগে চিহ্নিত করুন। দ্রুত তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে হবে। দরকার হলে আমি তাদের লাইসেন্স বাতিল করব।”
এ দিনের শুনানির পর আমরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। মামলা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কমিশন খামখেয়ালি মনোভাব দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে সেই বিবৃতিতে।
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বলা হয়েছে, ১৯০০-এর বেশি প্যাকেজ আছে। রোগীর যে রোগই হোক না কেন, তা কোনও না কোনও প্যাকেজের আওতায় অনায়াসে চলে আসে। যদি এমার্জেন্সি হয়, সে ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মেডিসিন ও সার্জারিতে প্যাকেজ বহির্ভূত বিল করা যাবে। বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বাস্থ্যসাথীর আওতায়। সরকার মানুষের সুবিধার জন্যই এই প্রকল্প চালু করেছে। এদিকে যদি ‘আনস্পেসিফায়েড প্যাকেজ’-এও রাশ টানা দরকার বলে মনে করছে স্বাস্থ্যসাথী সমিতি।
স্বাস্থ্যসাথী সমিতির তরফে দু’টি অ্যাডভাইজারি জারি করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। একটি মূলত বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলির জন্য। দ্বিতীয় অ্যাডভাইজারিটি সরকারি হাসপাতালের জন্য। প্রথম যে অ্যাডভাইজারি তাতে বলা হয়েছে, ১৯০০-এর বেশি ‘স্পেসিফায়েড প্যাকেজ’ রয়েছে। অর্থাৎ যে রোগই হোক না কেন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় এরকম ১৯০০ প্যাকেজ রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য সমিতি সেলের পর্যবেক্ষণ, প্যাকেজ বহির্ভূত টাকা নিয়ে রোগীর চিকিৎসা করছে একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল। প্যাকেজ বহির্ভূত এই খরচ নিয়েই অ্যাডভাইজারিতে বার্তা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: COVID Update: এক লাফে দেড়শো’র বেশি বাড়ল করোনা, হাজারের দোড়গোড়ার বিষ-নিঃশ্বাস ফেলছে সংক্রমণ