কলকাতা: সংরক্ষিত আসনে টেট পাশের নম্বর কত? তৃতীয় বেঞ্চে মামলার শুনানি শেষ। আপাতত রায়দান স্থগিত। সংরক্ষিত আসনে টেট পাশের নম্বর নিয়ে রায়ে দুই বিচারপতির ভিন্ন মতের ফলে সেই মামলা যায় তৃতীয় বেঞ্চে। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের একক বেঞ্চ বুধবার সেই মামলার শুনানি শেষ হয়।
এদিনের শুনানিতে প্রাইমারি বোর্ডের আইনজীবী লক্ষ্মী গুপ্ত বলেন, “এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত মামলা মিউজিক্যাল চেয়ারে পরিণত হতে পারে।” সেক্ষেত্রে তিনি চাকরিপ্রার্থী ববিতা সরকারের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, ” ঠিক এই অবস্থা ববিতার ক্ষেত্রে হয়েছিল।”
প্রসঙ্গত, প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ কন্যা অঙ্কিতার জায়গায় আদালতের নির্দেশে চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর অ্যাকাডেমিক স্কোর ও মেরিট লিস্ট ভাইরাল হয়। এসএসসি-র মেরিট লিস্টে ববিতার প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৭৭। লিখিত পরীক্ষায় ৩৬, অ্যাকাডেমিক স্কোর ৩৩, মৌখিক পরীক্ষায় ৮, সব মিলিয়ে ববিতার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় ববিতার আবেদনের ফর্মে দেখা যায়, স্নাতক স্তরে ৮০০-র মধ্য়ে ৪৪০ নম্বর পেয়েছেন তিনি। সেক্ষেত্রে তাঁকে অ্যাকাডেমিক স্কোরে ২ নম্বর বেশি দেওয়া হয়েছে। পরে অবশ্য তাঁর বদলে তাঁর চাকরি দাবিদার অনামিকা রায়। বিচারপতি অবশ্য এদিনের শুনানিতে স্পষ্ট বলে দেন, “দুটো বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা।”
সওয়াল জবাবের সময়ে চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলেন, “এনসিটিই বলছে ৮২ পেলে তবেই পাশ। রাজ্য কমিশনও একই কথা বলছে। তবে এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা কী?”
এর আগে টেটে সংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রে ৫৫ শতাংশ নম্বর ধার্য ছিল। মোট ১৫০ নম্বরে হয়েছিল পরীক্ষা। সেই অর্থে ৮২.৫ নম্বর পেলেই পাশ।
এর আগে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করলেও রায় নিয়ে দুই বিচারপতি ভিন্ন মত পোষণ করেন।
একজন বিচারপতি ৮২ পেলেই পাশ, অর্থাৎ সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখার পক্ষে ছিলেন। অন্য বিচারপতি ৮৩-র পক্ষে মত পোষণ করেন।
তার পরেই মামলা যায় তৃতীয় একক বেঞ্চে।
উল্লেখ্য, টেটের পাশ মার্ক সংক্রান্ত একটি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, প্রার্থী ৮২ পেলেই, তাঁকে টেট পরীক্ষায় সফল বলে ধরা হবে। তিনি সেক্ষেত্রে এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশ ও এনসিটিই-র রিপোর্ট উল্লেখ করে এই রায় দেন। বোর্ড সেই সিদ্বান্ত মেনে নেয়। শুরু হয় ইন্টারভিউ। সেই সময়েই আবার বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁদের দাবি, ৮২ পেলে পাস করানো যাবে না। পাশের ধার্য মার্কস ৮৩ ধরা হোক। এদিকে, আবার ৮২ পেয়েছেন এমন ১০ হাজার চাকরিপ্রার্থীকে টেটে সফল হিসাবে ইন্টারভিউও দেন। তার মধ্যেই এই মামলা। যা ডিভিশন বেঞ্চে অমীমাংসিত থেকে যায়। মামলা যায় তৃতীয় বেঞ্চে।