কলকাতা: হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির অপসারণ চেয়ে রবিবারই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখেছিলেন রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অশোক দেব। কিন্তু সেই চিঠি ঘিরে ইতিমধ্যেই দ্বিধা বিভক্ত বার কাউন্সিলের সদস্যরা। একাংশের দাবি, কাউকে কিছু না জানিয়ে এই চিঠি লেখা হয়েছে। সকলের মত ছাড়াই বার কাউন্সিল অব ওয়েস্ট বেঙ্গলের লেটার হেডে এ ধরনের চিঠি কী ভাবে লেখা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এই চিঠি আদালত অবমাননার শামিল বলেই দাবি ওই আইনজীবীদের।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার রাতে। বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের লেটার হেডে ছ’পাতার একটি চিঠি লেখেন রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অশোক দেব। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁর অপসারণের দাবি তোলেন তিনি। চিঠিতে অশোক দেবের বক্তব্য ছিল, নারদ জামিন মামলায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের ভূমিকা প্রশ্নসাপেক্ষ। বিশেষ সিবিআই আদালত ধৃতদের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু বিচারপতি বিন্দল সেই নির্দেশ খারিজ করে দেন। একইসঙ্গে এই মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর হলফনামা নিতে প্রথমে অস্বীকার করেন তিনি। অথচ পরে সুপ্রিম কোর্টও হাইকোর্টকেই এই হলফনামা দিতে বলে। শুধু নারদ মামলাই নয়, নন্দীগ্রাম-মামলাতেও বিচারপতি বিন্দলের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন আইনজীবী অশোক দেব। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিরপেক্ষ নন বলেই অভিযোগ তোলেন এ রাজ্যের বার কাউন্সিল চেয়ারম্যান।
বিতর্ক শুরু হয় তারপরই। বিকাশ ভট্টাচার্যের মতো বিশিষ্ট আইনজীবীরা এর সরাসরি প্রতিবাদ করেন। কোনও বৈঠক ছাড়াই কী ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। রাতে বিকাশ ভট্টাচার্য টুইট করে এর প্রতিবাদও জানান। অন্যদিকে কৈলাশ তামলি-সহ একাধিক আইনজীবীর বক্তব্য, “কোনও বৈঠক ছাড়াই বারের লেটার হেড ব্যবহার করে এ ধরনের চিঠি লেখা রীতিমত বেআইনি।”
আরও পড়ুন: আজই ভেন্টিলেশন থেকে বের করা হল ছোট্ট ‘লড়াই’কে… আফশোস! শুধু আদর পেল না মায়ের
কেউ কেউ আবার এই লেটার হেড আদৌ আসল কি না তা নিয়েও ধন্দ প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে আইনজীবী সমীর পাল-সহ একাংশের দাবি, “বারের লেটার হেডে কোনও অশোক স্তম্ভই নেই।” সমীর পালের বক্তব্য, তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে কথা বলছেন অশোকবাবু। এমনকী শোনা যাচ্ছে, তৃণমূল লিগাল সেলের আইনজীবীদের মধ্যেও অশোক দেবের এই চিঠি নিয়ে দ্বিধা কাজ করছে। প্রসূন দত্তের মতো আইনজীবীরা নাকি ঘনিষ্ঠমহলে এই চিঠি নিয়ে অসম্মতির কথাও জানিয়েছেন বলে খবর। যদিও অশোক দেবের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। ফোন ধরেননি তিনি।