আজই ভেন্টিলেশন থেকে বের করা হল ছোট্ট ‘লড়াই’কে… আফশোস! শুধু আদর পেল না মায়ের

Jun 28, 2021 | 5:01 PM

Calcutta Medical College and Hospital: ভেন্টিলেশনেই প্রসব করেছিলেন মা। কিন্তু একদিনের মধ্যেই হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

আজই ভেন্টিলেশন থেকে বের করা হল ছোট্ট লড়াইকে... আফশোস! শুধু আদর পেল না মায়ের
নিজস্ব চিত্র।

Follow Us

তন্ময় প্রামাণিক: ৩৩ সপ্তাহের গর্ভস্থ সন্তানকে পৃথিবীতে এনেছিলেন মা। বাধ্য হয়েই সময়ের এতটা আগে তাঁকে বের করে আনতে হয়। ‘প্রিম্যাচিওর’ এই শিশু নিয়ে চিন্তা ছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের। তবে ডাক্তারদের অদম্য জেদ আর অদেখা কোনও শক্তির অপার জোরে আপাতত সেই পুঁচকে অনেকটাই ভাল। জন্মের পর থেকে ভেন্টিলেশনে ছিল সে। সোমবার সেখান থেকে বের করে আনা হল ‘লড়াই’কে। করোনা রিপোর্টও নেগেটিভ। একটাই আফশোস, সন্তানের একটু একটু করে আলোর দিকে ফেরা দেখে যেতে পারলেন না মা।

উত্তর ২৪ পরগনার রাখি মণ্ডল বিশ্বাস (৩৩)। করোনা আক্রান্ত হয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন সম্প্রতি। সেই সময় আবার তিনি সন্তানসম্ভবাও ছিলেন। পরিস্থিতি জটিল হতে থাকায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে করোনা চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট এসএসবি- তে ভর্তি করানো হয় রাখিকে। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রেখে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট দেওয়া শুরু হয়।

সেই করোনা সিসিইউ ভেন্টিলেশনেই গত ২১ জুন অস্ত্রোপচার করে বের করা হয় ৩৩ সপ্তাহের গর্ভস্থ সন্তান। এরপর থেকে ভেন্টিলেশনেই রাখা হয়েছিল শিশুটিকে। ঠিক সাতদিনের মাথায় নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা NICU-র ভেন্টিলেশন থেকে বের করা হয় শিশুকন্যাকে। বহু লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে তাঁর পৃথিবীতে আসা। তাই ডাক্তার, নার্সরা আদর করে তার নাম রেখেছেন ‘লড়াই’।

আরও পড়ুন: অসুস্থ ‘গানওয়ালা’, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি কবীর সুমন

লড়াই-এর ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে রাখির শরীরে অক্সিজেন মাত্রা ৫৫-৬০ ছিল। ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রেখে তড়িঘড়ি বের করা হয়েছিল শিশুটিকে। যদিও ২২ তারিখ ভোরেই হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয় রাখির। তবে চিকিৎসকরা এক মুহূর্তের জন্য চোখের আড়াল করেনি ছোট্ট লড়াইকে। সাতদিন পর সে ভেন্টিলেশনের বাইরে। সোমবার আর পাঁচটা সাধারণ সদ্যোজাতর মতোই জেনারেল বেডে রাখা হয়েছে। খাচ্ছে নিয়মমতো।

প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক পূজা বন্দ্যোপাধ্যায় ভৌমিক বলেন, “দু’টো প্রাণ বাঁচানোর সবরকম চেষ্টা আমরা করেছিলাম। মাকে বাঁচাতে পারিনি। কিন্তু সন্তান আজ ভেন্টিলেশন মুক্ত হল। দেড় কেজি ওজন। করোনা সংক্রমণ নেই। আপাতত স্বাভাবিক খাওয়া দাওয়া করছে। আমাদের প্রাপ্তি এই লড়াই।”

Next Article