Maoist leader: মাওবাদী অর্ণব পরীক্ষায় প্রথম, সেই পিএইচডির ভর্তি স্থগিত রাখল কর্তৃপক্ষ
Maoist leader: ২০১০ সালে শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলা হয়। সেই ঘটনায় অর্ণব ওরফে কিষেণজির স্নেহভাজন বিক্রমের নাম জড়ায়। দোষী সাব্যস্ত হন তিনি, সাজাও পান। সেই অর্ণব জেল থেকেই পিএইচডি করতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। এরপরই সম্প্রতি ২৫০ জনের সঙ্গে তিনিও পিএইচডি করার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ দেন।
কলকাতা: বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের পিএইচডিতে ভর্তির দিন ছিল মঙ্গলবার। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য তা স্থগিত রাখা হল। সোমবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ইতিহাসের পিএইচডির জন্য মেরিট-বেসড কাউন্সেলিং হচ্ছে না। কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আনঅ্যাভয়েডবল সারকামস্ট্যান্সেস’। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এমন কী ঘটল, যার জন্য ইতিহাসের এই কাউন্সেলিং বন্ধ রাখতে হল? প্রসঙ্গত, এই পিএইচডির প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন জেলবন্দি মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। মেধার ভিত্তিতে তিনিই অগ্রাধিকার পাবেন এই পিএইচডিতে। তবে এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে নানামহলে উঠছে প্রশ্ন।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শিলদাকাণ্ডে যাবজ্জীবন হয় অর্ণব দামের। প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুর সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল তাঁকে। এরপর ১৭ মার্চ হুগলি জেলা সংশোধনাগারে পাঠানো হয় অর্ণবকে। অর্ণবের বাবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। অর্ণব খড়গপুর আইআইটির ছাত্র ছিলেন। তবে পড়তে পড়তেই মাওবাদী সংগঠনে নাম লেখান অর্ণব। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মেধাবী ছাত্র তখন কখনও লালগড়ে, কখনও ভিন রাজ্যের জঙ্গলমহলে।
২০১০ সালে শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলা হয়। সেই ঘটনায় অর্ণব ওরফে কিষেণজির স্নেহভাজন বিক্রমের নাম জড়ায়। দোষী সাব্যস্ত হন তিনি, সাজাও পান। সেই অর্ণব জেল থেকেই পিএইচডি করতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। এরপরই সম্প্রতি ২৫০ জনের সঙ্গে তিনিও পিএইচডি করার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ দেন। গত সপ্তাহেই রেজাল্ট বেরোয়, তালিকায় প্রথমেই অর্ণব দামের নাম। এদিন ভর্তি হওয়ার কথা ছিল তাঁরও।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম চন্দ্র এ বিষয়ে বলেন, “যে ছেলেটি সংশোধনাগার থেকে এসেছিল সেও মেরিট লিস্টে আছে। আমাদের এখানে ৬ মাসের একটি কোর্স ওয়ার্ক হয়, যা অফলাইন। তাঁকে এখানে নিয়ে আসা, নিয়ে যাওয়া, কীভাবে কী হবে তা সংশোধনাগারের সুপারিনটেনডেন্টের কাছে জানতে চেয়েছি। সে কারণেই আপাতত স্থগিত থাকছে কাউন্সেলিং।”
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সৈয়দ তনভীর নাসরিন বলেন, “আমাদের বিভাগ থেকে যা করণীয় আমরা তা সবই করে দিয়েছি। কেন ভর্তি স্থগিত রাখা হল তা বলতে পারব না। এটা একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই বলতে পারবে। তবে আমি মনে করি তাঁর ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনও বাধা বা জটিলতা থাকার কথা নয়। একজন জেলে বন্দী অবস্থায় নির্বাচনে দাঁড়িয়ে সাংসদ নির্বাচিত হচ্ছেন। সেই ক্ষেত্রে অর্ণবের কোনও বাধা থাকার কথা নয়।”