Tiljala Minor Death: মাথায় সুচলো অস্ত্রের ফুটো, সন্তান পেতেই বলি! তিলজলায় শিশুকন্যা খুনের বীভৎসতায় ফিরল পুরুলিয়ার সুচকাণ্ডের ছায়া

Tiljala Minor Death: অভিযুক্তের বাড়ির দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। তাই পুলিশ খোঁজ করলেও তাঁর ফ্ল্যাটে সন্ধান চালানো প্রথমে সম্ভব হয়নি। দীর্ঘক্ষণ পর পুলিশ ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালান। শিশুকন্যাটির চেহারার বীভৎসতা দেখে শিউরে উঠেছে পুলিশও।

Tiljala Minor Death: মাথায় সুচলো অস্ত্রের ফুটো, সন্তান পেতেই বলি! তিলজলায় শিশুকন্যা খুনের বীভৎসতায় ফিরল পুরুলিয়ার সুচকাণ্ডের ছায়া
তিলজলায় তুমুল বিক্ষোভ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 27, 2023 | 11:59 AM

কলকাতা: মাথায় হাতুড়ির আঘাত, সারা শরীর সুচলো অস্ত্রে ক্ষতবিক্ষত। শেষমেশ শ্বাসরোধ করে খুন। তিলজলাকাণ্ডে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের হাতে উঠে আসছে আরও বিস্ফোরক তথ্য। শিশু ‘খুনে’র নেপথ্যে উঠে আসছে তান্ত্রিকযোগ। অভিযুক্তকে জেরা করে জোরাল ‘ক্লু’ হাতে এসেছে তদন্তকারীদের। তিলজলায় সাত বছরের শিশু কন্যার খুনের ঘটনায় জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্তের কোনও সন্তান ছিল না। সে কারণে কোনও এক তান্ত্রিকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। তিনিই নাকি নিদান দিয়েছিলেন নবরাত্রির সময়ে কোনও শিশু বলি দিলে বাড়িতে সন্তান আসবে। সেক্ষেত্রে এই তান্ত্রযোগের বিষয়টিও উঠে আসছে। পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় অভিযুক্ত বিষয়টি কবুলও করেছে। পুলিশ বলছে, শিশুর হাত-পা বাঁধা ছিল। খুনের আগে শিশুটির ওপর যৌন নির্যাতনও হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, পরিবারের তরফ থেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

তিলজলার একই আবাসনের চারতলায় থাকে শিশুটির পরিবার। একতলায় থাকেন অভিযুক্ত। সকালে শিশুটির মা তাকে আবর্জনার থলিটা ফেলে আসতে বলেছিলেন। শিশুটি নীচে যায়। দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে যাওয়ার পরও না ফিরে আসায় পরিবারের সদস্যরা খোঁজ শুরু করেন। খবর চাউর হয়ে যায় এলাকায়। পাড়া প্রতিবেশীরাও খোঁজ শুরু করেন। শেষমেশ তার দেহ প্রতিবেশীর ফ্ল্যাটের রান্নাঘর থেকে উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুকন্যাটির হাত-পা বাঁধা ছিল। শিশুটির মাথায় ক্ষত ছিল। কিছু দিয়ে ফুটো করার চিহ্ন মিলেছে। আঘাত ছিল কানেও। রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডারের পাশে একটি বস্তার মধ্যে দেহ লুকনো ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

অভিযুক্তের বাড়ির দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। তাই পুলিশ খোঁজ করলেও তাঁর ফ্ল্যাটে সন্ধান চালানো প্রথমে সম্ভব হয়নি। দীর্ঘক্ষণ পর পুলিশ ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালান। শিশুকন্যাটির চেহারার বীভৎসতা দেখে শিউরে উঠেছে পুলিশও। বিহারের বাসিন্দা ওই অভিযুক্তকে জেরা করে যে তথ্য জানতে পারছে তা আরও চমকে ওঠার মতো। জানা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তির কোনও সন্তান ছিল না। তাই তাঁরা কোনও তান্ত্রিকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। তিনিই নাকি বলেছিলেন, সন্তান পেতে শিশুর বলি দিতে হবে।

কোনও প্রত্যন্ত গ্রামে নয়, শহরের বুকে দাঁড়িয়ে এই ঘটনার তদন্তে নেমে রীতিমতো শিউরে উঠছে পুলিশ। কীভাবে একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে তিলজলার মতো ব্যস্ততম এলাকাতেও এই ধরনের মানসিকতা বুকে পুষে রেখেছেন অনেকে! অভিযুক্তকে জেরা করে যা যা তথ্য মিলছে, তাতে স্তম্ভিত পুলিশ কর্তারাও। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অপহরণ করে খুন এবং যৌন নির্যাতনের মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় খুনের কথা স্বীকারও করেছে অভিযুক্ত।

২০১৭ সালের জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে এরকমই একটা বীভৎস ঘটনা সামনে আসে। পুরুলিয়ায় দেবেন মাহাত সদর হাসপাতালে সর্দি কাশির সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয় ওই শিশুকন্যা। কিন্তু হাসপাতালের ডাক্তাররা শিশুটিকে পরীক্ষা করে চমকে ওঠেন। শরীরে ক্ষত, বুকে ও যৌনাঙ্গেও ক্ষত। এক্স রে করে আরও চমকে ওঠেন চিকিৎসকরা। শিশুটির শরীরের ভেতর বিশাল সাইজের সাত সাতটি সুচ ঢুকে ছিল। পুরুলিয়ার সেই সুচ কাণ্ডের ছায়া যেন ফিরল তিলজলায়।