TMC: জেলায় জেলায় ব্লক সভাপতি বদল, নীচুতলার সংগঠন ঢেলে সাজাচ্ছে তৃণমূল
TMC: এবার তৃণমূলের নীচুতলার সংগঠনের বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হল। মোট আটটি জেলার ১৩টি ব্লকে নতুন ব্লক সভাপতিকে দায়িত্বে নিয়ে আসা হয়েছে। কোনও কোনও ব্লকে সহসভাপতিও বদল হয়েছে।

কলকাতা: লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের আরও একদফা নবজোয়ার কর্মসূচি ঘিরে জল্পনা চলছে। পুজো মিটলেই এই নবজোয়ার-২ শুরু হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এসবের মধ্যেই এবার তৃণমূলের নীচুতলার সংগঠনের বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হল। মোট আটটি জেলার ১৩টি ব্লকে নতুন ব্লক সভাপতিকে দায়িত্বে নিয়ে আসা হয়েছে। কোনও কোনও ব্লকে সহসভাপতিও বদল হয়েছে। তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর ও তপন, মালদার হবিবপুর ও কালিয়াচক-৩, মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি, নদিয়ার তেহট্ট-১, হুগলির আরামবাগ ও পুরশুরা, পূর্ব বর্ধমানের রায়না-২, পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা, গড়বেতা-২-এ ও দাসপুর -১ ব্লক এবং পুরুলিয়ার হুরা ব্লক।
ডেবরার নতুন ব্লক সভাপতি করা হয়েছে প্রদীপ করকে। তিনি এলাকায় মন্ত্রী মানস ভূঁইঞার ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। অন্যদিকে ডেবরা ব্লকের সভসভাপতি সীতেশ ধারা ঘাটালের সাংসদ দেবের প্রতিনিধি। সব জায়গায় একজন করে সাংসদ প্রতিনিধি থাকেন, যিনি সাংসদের উন্নয়নের কাজকর্মগুলির দেখাশোনা করেন। সীতেশ ধারাও তেমনই একজন।
অন্যদিকে দাসপুর – ১ ব্লকের নতুন সভাপতি হয়েছেন সুনীল ভৌমিক। এই পদ দিয়ে তাঁকে ‘সন্তুষ্ট’ করা হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসাবে সুনীলের নাম মনোনীত করেছিলেন রাজ্যের তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু স্থানীয় নেতৃত্ব ও কর্মীদের বাধায় শেষ পর্যন্ত সভাপতি হতে পারেননি সুনীল। তাই পশ্চিম মেদিনীপুরের রাজনীতিতে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, ব্লক সভাপতি করে সুনীলকে পদ দেওয়া হল। সাংগঠনিক পদে ‘পুনর্বাসন’ দেওয়া হল সুনীলকে।
লোকসভা ভোটের আগে দলের নীচুতলায় এই সাংগঠনিক রদবদল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। পঞ্চায়েত ভোটে ব্য়াপক সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। কিন্তু এর মধ্যেও কিছু কিছু জায়গায় আশানুরূপ ফল হয়নি শাসক দলের। এবার সেই সব জায়গাগুলিকে সাংগঠনিকভাবে আরও মজবুত করে তুলতে চাইছে তৃণমূল। এর পাশাপাশি কোথাও কোথাও তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগও উঠে এসেছে। সেই সব মিলিয়েই ব্লকস্তরে এই পরিবর্তন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কোথায় কোথাও আবার পঞ্চায়েত ভোট পরবর্তী সময়ে অনেকেই পঞ্চায়েত সমিতিতে দায়িত্ব পেয়েছেন, সেক্ষেত্রে তাঁদেরও ব্লকের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
যেমন মালদার ক্ষেত্রে হবিবপুর এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে খুব একটা আশানুরূপ ফল করেনি তৃণমূল। এদিকে এই এলাকায় বিজেপি ক্রমেই শক্তি বাড়াচ্ছিল বলেও স্থানীয় সূত্রে খবর। এলাকায় বিজেপির বিধায়ক খগেন মুর্মুর প্রভাবও যথেষ্ট। অন্যদিকে কালিয়াচক-২ ব্লকে আবার বিভিন্ন সময়ে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ উঠে এসেছে। পাশাপাশি এলাকায় বিজেপির উত্থানও একটি অন্যতম কারণ হতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
দক্ষিণ দিনাজপুরের ক্ষেত্রে আবার হরিরামপুরে পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ উঠে এসেছিল। এমনকী দলের তালিকাকে মান্যতা না দিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনেরও অভিযোগ উঠেছিল। হুগলির ক্ষেত্রে আবার দেখা যাচ্ছে পুরশুরার যিনি ব্লক সভাপতি ছিলেন, তিনি পঞ্চায়েত ভোটের পর ভাঙামোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছেন। আরামবাগে যিনি ব্লক সভাপতি ছিলেন, তিনি আবার আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েছে। যদিও গোঘাট-১ ব্লকের ক্ষেত্রে যিনি ব্লক সভাপতি, তিনিই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। এক্ষেত্রে কোনও বদল হয়নি। অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমানের রায়না-২ ব্লক পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে বেশ কিছু গোঁজ প্রার্থী দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। দলবিরোধী কাজের অভিযোগ উঠেছিল।
