কলকাতা : বিগত তিন বছরে এই প্রথম বার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্যের শাসক শিবির তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। অতীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা অন্যান্য নেতারা এসেছিলেন বটে, কিন্তু তা ছিল প্রশাসনিক কাজে। তবে এই প্রথম ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন তৃণমূলের নেতারা। প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে আলোচনা। উপস্থিত ছিলেন ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষ, সায়নী ঘোষ সহ অন্যান্যরা। রাজ্যপাল যে ভিডিয়োটি টুইট করেছেন তাতে দেখা গিয়েছে, সবাই বেশ খোশ মেজাজে। হাসি মুখেই আলোচনা হয়েছে, কথাবার্তা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ছিল রকমারি খাবারের আয়োজনও। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠকের সময় রাজভবনে ছিল এলাহি আয়োজন। খাবারের তালিকায় ছিল চা, সিঙারা, ধোকলা, নানা রকমের মিষ্টি। দুপুর বেলা রাজভবনে গিয়েছিলেন কুণাল – ব্রাত্যরা। প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে বৈঠক। দেরি হচ্ছে বলে রাজভবনে তাঁদের জন্য মধ্যাহ্নভোজের জন্যও অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের অনেকের অন্য কাজ ছিল। তাই মধ্যাহ্নভোজ আর করা হয় না তাঁদের।
সূত্রের খবর, মূলত বিজেপি প্রতিনিধি দল রাজভবনে এসে কী কী নালিশ জানান, সেগুলি রাজ্যপাল জানিয়েছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিদের। আবার খুব তাড়াতাড়ি তৃণমূল নেতারা রাজভবনে যাবেন, এমনও শোনা যাচ্ছে। তবে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এই হাসিমুখে আলোচনা, খোশমেজাজে কথাবার্তা, দুই পক্ষের সৌজন্য… সব যেন কোথাও হারিয়ে গেল তৃণমূল নেতারা রাজভবনের বাইরে পা রাখতেই। রাজ্যপাল আবার রাজ্যকে ঠেঁস দিয়ে টুইট করলেন। একেবারে কড়া ভাষায় সতর্ক করে দেওয়া হল রাজভবন থেকে। রাজ্যে যাতে শাসকের আইনের বদলে আইনের শাসন বলবৎ হয়, যাতে সিন্ডিকেট-রাজ এবং মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য দূর করা হয় – সেই বার্তা জানিয়েছেন রাজ্যপাল। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীও যাতে নিজের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করেন, সেই কথাও টুইটারে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। সেই নিয়ে আবার পাল্টা আক্রমণ করেছেন কুণাল ঘোষও। টুইটারে তৃণমূল মুখপাত্র লিখেছেন, “রাজ্যপাল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিকৃত টুইট করেছেন।”
রাজ্য – রাজ্যপাল সম্পর্ক বার বার তিক্ততার চরমে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার তৃণমূলের প্রতিনিধি দল যখন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান, তখন সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চিত্র ধরা পড়ে। কিন্তু রাজভবনের ভিতরে সৌজন্যের সেই বাতাবরণ যেন বাইরে বেরোতেই কর্পূরের মতো উবে গেল। আবার সেই আক্রমণের সুর রাজ্য – রাজ্যপাল উভয় দিকেই।