এক ব্যক্তি, এক পদ: সংগঠনের খোলনলচে বদলে ফেলল তৃণমূল, বাদ গেলেন বালু-মহুয়া সহ অনেকে

TV9 Bangla Digital | Edited By: ঋদ্ধীশ দত্ত

Aug 16, 2021 | 8:49 PM

তৃণমূল ভবনে গত ৫ জুনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল দলে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কার্যকর করা হবে। আজ, সোমবার দলের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা ঘোষণা করা হল।

এক ব্যক্তি, এক পদ: সংগঠনের খোলনলচে বদলে ফেলল তৃণমূল, বাদ গেলেন বালু-মহুয়া সহ অনেকে
বাদ পড়লেন বালু মহুয়ারা। অলংকরণ-অভীক দেবনাথ

Follow Us

কলকাতা: যেমন কথা, তেমন কাজ। বিধানসভা নির্বাচন মেটার পরই দলীয় সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, এ বার তৃণমূলে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কার্যকর হতে চলেছে। ফলে বহু তাবড় তাবড় মন্ত্রী ও সাংসদ সাংগঠনিক পদ হারাতে পারেন, এমন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। বাস্তবেও তাই হল। জেলা সভাপতি পদ হারালেন অনেকে। সেই জায়গায় নিয়ে আসা হল নতুন মুখ। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি জেলা সংগঠনকে দুভাগে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের শাসকদলের এই পদক্ষেপকে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতি হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল। এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যেও ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শও থাকতে পারে বলে জানাচ্ছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।

তৃণমূল ভবনে গত ৫ জুনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল দলে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কার্যকর করা হবে। আজ, সোমবার দলের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা ঘোষণা করা হল। নতুন জেলা সভাপতিদের নামের তালিকা প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে ঘাসফুল শিবিরে পক্ষ থেকে।

সংগঠনের খোলনলচে বদলে ফেলায় জেলা সংগঠন থেকে বাদ গিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়, সৌমেন মহাপাত্র, পুলক রায়, অরূপ রায়, দিলীপ যাদব, বেচারাম মান্না, মহুয়া মৈত্র, পার্থপ্রতিম রায় (কোচবিহার), অখিল গিরি, মৌসম নুর, আবু তাহের, শুভাশিস চক্রবর্তী-সহ আরও অনেকে। তবে এ দিন যে যে সিদ্ধান্ত তৃণমূলের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল- বেশিরভাগ বড় জেলাগুলোকে দুই বা তিনটি সাংগঠনিক জেলা হিসেবে ভেঙে ফেলা। এর পাশাপাশি জেলায় থাকা কো-অর্ডিনেটর পদও তুলে দেওয়া হয়েছে।

তৃণমূল সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগনা জেলাকে ৪ টি সাংগঠনিক জেলায় ভেঙে ফেলা হয়েছে। জেলা সভাপতি পদ হারিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও নদিয়াকে ভাঙা হয়েছে দু’ভাগে। মুর্শিদাবাদ জেলা সংগঠনকে ৩ ভাগে, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরকে দু’ভাগে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর পাশাপাশি হুগলি, হাওড়া, মালদা, দার্জিলিং, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলির সংগঠনকেও দু’ভাগে ভেঙে দিয়েছে তৃণমূল। ক্ষমতার বণ্টন ও বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জেলা সংগঠনগুলি আরও মজবুত করার উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

মূলত যে যে মন্ত্রীরা জেলা সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের সবাইকেই এ দিন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। হুগলি জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়েছে দিলীপ যাবদকে। বাদ দেওয়া হয়েছে মহুয়া মৈত্র, অজিত মাইতি থেকে পুলক রায়, স্বপন দেবনাথ, সৌমেন মহাপাত্র, সন্ধ্যারানি টুডু, মৌসম বেনজির নুর, আবু তাহের, কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীকে। এ বাদেও কোচবিহারের দায়িত্ব থেকে পার্থপ্রতিম রায়কে সরানো হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের অখিল গিরিও সরেছেন।

সাংগঠনিক রদবদলের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গের উপর। বিধানসভা ভোটে সেখানে তুলনামূলক খারাপ ফল হয়েছিল তৃণমূলের। একমাত্র উত্তর দিনাজপুরের কানাইলাল আগরওয়াল বাদে সব জেলা সভাপতিকেই বদলে ফেলা হয়েছে। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত বেশিরভাগ জেলা সভাপতিদের বয়সও তুলনায় কম। যা দল এবং সংগঠনের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত বয়ে আনবে বলে আশাবাদী তৃণমূল। আরও পড়ুন: হাইকোর্টে বড় জয় শুভেন্দুর, রাজ্যকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ বিচারপতির

 

Next Article