কলকাতা: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, প্রয়োজন হলে আমাকে ফাঁসির মঞ্চে তুলুন। শুধুমাত্র আজ নয়, এমন কথা আগেও বলেছেন অভিষেক। কেন্দ্রীয় সংস্থার মুখোমুখি হওয়া নতুন নয় তাঁর কাছে। কয়লা-কাণ্ডে ইডি দফতরে একাধিকবার গোয়েন্দাদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। তাঁর পরিবারকেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। তাহলে কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় কেন এক আদালত থেকে আর এক আদালতে যাচ্ছেন অভিষেক? কী বলছে তৃণমূল? ঘাসফুল শিবিরের ব্যাখ্যা, তাঁদের দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ভয় পাচ্ছেন না মোটেই। তাহলে কিসের অস্বস্তি?
তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, ‘নিয়োগ মামলায় চুরির অভিযোগে যিনি গ্রেফতার হয়েছেন, যাঁকে আমাদের দল তাড়িয়ে দিয়েছে। তাঁর মুখোমুখি বসিয়ে কাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে? আমাদের দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে। মান-সম্মানের প্রশ্নটা এখানেই।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘চুনো-পুঁটি’রা যে কারও নাম বললেই তাঁদের ডাকা হবে? জে পি নাড্ডার নাম বললে তাঁকেও ডাকা হত?
আদালতের যুক্তি ছিল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষের মুখে একই কথা শোনা গিয়েছে। তাঁর নাম করতে অভিযুক্তদের চাপ দেওয়া হয়, সভা থেকে এমন দাবি করেছিলেন অভিষেক। আর তার পরের দিনই কুন্তল ঘোষ আদালতে গিয়ে বলেন, অভিষেকের নাম বলতে চাপ দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। বয়ানে এমন মিল কীভাবে? সেটা খুঁজতেই জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে আদালত। এই প্রসঙ্গে দেবাংশুর যুক্তি, হতে পারে কুন্তল ঘোষ মিথ্যা বলছেন, হতে পারে কুন্তলকে আগেই চাপ দেওয়া হচ্ছিল, বলতে সাহস পাচ্ছিলেন না তিনি।
তবে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের দাবি, এ ক্ষেত্রে কুন্তল ঘোষ চাইছেন, তাঁকে দিয়ে চুরি কারা করিয়েছে, তাঁদের নাম সামনে আনতে। তিনি বলেন, কেউ যখন ধরা পড়ে, তখন যে কাজটা করিয়েছে, তাকে সামনে আনার চেষ্টা করে। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন হল কার নির্দেশে কুন্তল এই কাজ করেছে? কালীঘাটের নির্দেশ না ক্যামাক স্ট্রিটের?
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও দাবি করেছেন, অভিষেকের ভয়ের কোনও কারণ নেই। এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জিজ্ঞাসাবাদ এড়াতে চান না, ভয়ও পাচ্ছেন না, উদ্বিগ্নও নন, ধাক্কা লেগেছে এমনও নয়। এর আগেও ইডির টানা জেরায় তিনি সহযোগিতা করেছেন, মোকাবিলা করেছেন, উত্তর দিয়েছেন। বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদেরও সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।’