কলকাতা: এনআরএস হাসপাতালে দালালচক্রের পর্দা ফাঁস। দু’জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার শহরের বেশ কয়েকটি হাসপাতালে একযোগে অভিযান চালায় কলকতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখা। তাতেই এনআরএস হাসপাতাল থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম গৌতম সরকার ও বিলাস সিং ওরফে বান্টি। বিলাস নারকেলডাঙার বাসিন্দা, গৌতমের বাড়ি নদিয়ার রানাঘাটে।
অভিযোগ, ধৃতরা রোগী ভর্তির নাম করে টাকা তুলতেন এবং প্রতারণা করতেন। মূলত বেড পাইয়ে দেওয়া, হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নামেই ধৃতরা টাকা নিতেন বলে অভিযোগ। তদন্তকারীরা ধৃতদের জেরা করে এ সংক্রান্ত নানা বিষয় জানার চেষ্টা করছেন। লালবাজার সূত্রে খবর, শনিবার শহরের একাধিক সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে অভিযান চালায় গুন্ডাদমন শাখা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ গৌতম ও বিলাসকে গ্রেফতার করে তদন্তকারীরা।
এই দালালচক্রের খপ্পড়ে পড়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রোগী ও তাঁর আত্মীয়দের নাকাল হতে হয়। শনিবারই সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীকে দালালের ফাঁদে পড়ে প্রাণ খোয়াতে হয় বলে অভিযোগ ওঠে। রমেশ হালদার নামে এক বৃদ্ধকে আইসিইউয়ে রাখার প্রয়োজন হলেও দালালচক্রের কারণে তিনি ভর্তি হতে পারেননি বলে পরিবারের লোকেরা অভিযোগ তোলেন। রমেশ হালদারের ছেলে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে ফোনে বিষয়টি জানান।
মদন মিত্র হাজির হন হাসপাতালে। বলেন, “কথা দিয়ে গেলাম এটাই সাগর দত্ত মেডিক্যালে শেষ দালালরাজ। এরপর যদি একটা দালালকে ধরতে পারি। এলাকার লোকজনকে বলব মারবেন না, গায়ে হাত দেবেন না। পুলিশকে দেওয়ার আগে একবার আমাদের হাতে দেবেন। এই চক্রের পিছনে কারা আছে তা ধরুক পুলিশ।”
যদিও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এই ঘটনায় কটাক্ষ করে বলেন, “দালাল ছাড়া কোনও হাসপাতাল চলবে নাকি? দালাল মানেই তৃণমূল, দালাল মানেই হাসপাতাল। তৃণমূলই তো লাইসেন্স দেয় দালালদের।” অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “ভয়ঙ্কর অবস্থা হাসপাতালগুলিতে। আমরাই পারি না কাউকে ভর্তি করতে।” যদিও তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের বক্তব্য, “এই বাংলায় স্বাস্থ্যে পরিকাঠামোগত ও পরিষেবাগত যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটেছে। কিছু অসাধু মানুষ তা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছেন।”