কলকাতা: ফের রেলের বিরুদ্ধে উঠল অভিযোগ। কোনও ট্রেন ছাড়ছে ৪ ঘণ্টা দেরিতে। কোনও ট্রেন আবার ৬ ঘণ্টা দেরিতে। কার্যত যাত্রীদের একাংশ পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন তাঁরা। প্রত্যেকেরই মুখে কার্যত এক কথা ‘দেরিতে ট্রেন ছাড়া এখন যেন রোজের বিষয়’। সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের এত বড় দুর্ঘটনার পর যখন রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, ঠিক তার মধ্যেই আবার প্রশ্ন উঠে গেল যাত্রী পরিষেবা নিয়ে।
প্রথম ঘটনাটি হাওড়া-দিঘা কাণ্ডারি এক্সপ্রেসের। হাওড়া থেকে কাণ্ডারি এক্সপ্রেস ছাড়ে দুপুর ২ বেজে ২৫ মিনিটে। সন্ধেয় ৫টা ৫০ মিনিটে দিঘায় পৌঁছনোর কথা। এই রেকই আবার সন্ধেয় ৬টা ২৫ মিনিটে দিঘা থেকে ছেড়ে হাওড়ার পথে ছোটে। হাওড়ায় ঢোকার কথা ৯টা ৪৫ মিনিটে। কিন্তু বুধবার দিঘা থেকে হাওড়ামুখী ট্রেন যখন ছাড়ে তখন সময় রাত্রি ১১টা ৪৫ মিনিট। এখানেই শেষ নয়, গোদের উপর বিষফোড়া! আচমকা ট্রেন থামিয়ে দেওয়া হয় সাঁতরাগাছিতে। অর্থাৎ সাড়ে ৪ ঘণ্টা দেরিতে চলা ট্রেন রাত আড়াইটার সময় সাঁতরাগাছি স্টেশনে ঢোকে। যার জেরে ক্ষুব্ধ যাত্রিরা। প্রত্যেকের প্রশ্ন, পরিবারের বয়স্ক বা শিশুদের নিয়ে দিঘা ঘুরতে যাওয়া যাত্রীরা এই রাতে কী ভাবে বাড়ি ফিরবেন? এই লাইনের নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, তিন থেকে চার ঘণ্টা দেরিতে চলাটা নাকি এখন রোজকার বিষয় এই ট্রেনের।
এক যাত্রী বলেন, “কী করব বলুন তো। বাড়ি ফিরব ফিরতে পারছি না।” আরও এক যাত্রী গৌতম রায় বলেন, “আমি যাব হাওড়া। এল দেখছি সাঁতরাগাছি পর্যন্ত। হাওড়া হলে সুবিধা হত। হঠাৎ করে কী হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে ৪,৫, ৬ঘণ্টা লেটে চলছে। এই পরিষেবা মোটেই কাম্য নয়।” আরও এক যাত্রীর কথায়, “হাওড়াতে ৬টা ২৫মিনিটে ট্রেন। সাড়ে দশটায় ঢুকেছে। ৯ঘণ্টা লেট করেছে দিঘা যাওয়ার জন্য। কে প্রতিবাদ করবে? কাউন্টারে জিজ্ঞাসা করলে পাত্তা দেয় না। লোকে ভোট দেয়নি বলে এসব করছে…।”
একই দশা, বারবিল-হাওড়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেসেরও। রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে হাওড়া পৌঁছনোর কথা সেটি। ৬ ঘণ্টা দেরিতে চলে সেই ট্রেন রাত ২ টোর পর সাঁতরাগাছিতেই থামিয়ে দেওয়া হয়। ফলে বাধ্য হয়ে পরিবার নিয়ে স্টেশনেই রাত কাটান অনেকে। এ প্রসঙ্গে সাউথ-ইস্টার্ন রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ডাউন ট্রেন বা লিঙ্ক ট্রেনের সময়ে বিভ্রাট হওয়ার কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ট্রেনগুলি রিসিডিউলের নির্দেশিকা আগেই দেওয়া হয়েছিল।