কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎকর্ষ কেন্দ্র বা সেন্টার অব এমিনেন্সের তকমা প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি (UGC)। এই নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল তরজা। জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের দাবি, রাজনৈতিক কারণে বাদ পড়েছে বাংলার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সে মর্যাদা ফেরাতেই হবে, দাবি করেছেন জুটার সাধারণ সম্পাদক। যদিও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার ইউজিসির সিদ্ধান্তের পাশে দাঁড়িয়েছেন। রাজনীতির বদলে পঠনপাঠনে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “২০১৮ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় তার একাডেমিক যে মান সেটা দিয়েই কিন্তু মনোনীত হয়েছে। অর্থাৎ পঠনপাঠনের দিক থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যে সেরা, তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। কিন্তু কোনও কারণে সরকার সে মানটা এখন দিচ্ছে না। আমাদের মনে হয় এটার পিছনে রাজনীতি ছাড়া আর কোনও কারণ থাকতে পারে না। যেখানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যা এখনও হয়নি এমনও বিশ্ববিদ্যালয়কে উৎকর্ষতার তকমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
যদিও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন, “গোটা পরিকল্পনাটাই তো অসম্পূর্ণ। এটা নজর করা দরকার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিৎ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাজ্য সরকারকে এর জন্য দায়ী করা। তারা দেখুক, প্রথম অ্যাপ্লিকেশনে কী ছিল, আর পরের অ্যাপ্লিকেশনে কী হয়েছে। আমি বলব, অধ্যাপক যাঁরা আছেন, তাঁরা ক্যাম্পাসের ভিতর রাজনীতিটা একটু কম করে বাকি প্রতিষ্ঠানকে কী ভাবে ভাল করা যাবে সেদিকে মন দিলে কেন্দ্রীয় শিক্ষা দফতর সম্পূর্ণ ভাবে মুখিয়ে আছে, যে প্রতিষ্ঠান যেমন ভাবে এগোতে পারবে তাদের সেই অনুযায়ী সহযোগিতা করতে।”
এর আগেও পার্থপ্রতিম রায় অভিযোগ করেছিলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা সঠিক সময়ে যাদবপুরকে অর্থ সাহায্য করে না। এদিন তিনি বলেন, “আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে উৎকর্ষের তকমাটা তো দেওয়া উচিৎ। তারপর টাকা পয়সা নিয়ে যদি কোনও সমস্যা থাকে তা কেন্দ্র-রাজ্য এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মিলে আলোচনা করতে পারে কার কতটা শেয়ার আসবে বা দেবে। কিন্তু সেখানে তকমাটা আটকে দেওয়া এটা আমাদের মনে হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি, বাংলার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনা। এই বঞ্চনা কিন্তু বাংলার মানুষ আগামিদিনে মেনে নেবে না।”
কয়েক বছর আগেই দেশের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেশের উৎকর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পায়। সে তালিকায় নাম ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরও। এদিকে এই মর্যাদার সঙ্গে যে এক হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তার কথা বলা হয় তার ২৫ শতাংশ রাজ্যকে দিতে হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু রাজ্যের কোষাগার থেকে তা দেওয়া সম্ভব না থাকায় কেন্দ্রকে প্রস্তাব দেওয়া হয় তারা ৮০০ কোটি টাকা দিক। বাকি ২৫ শতাংশ যাদবপুর নিজেদের তহবিল থেকে দেবে। কিন্তু এরই মধ্যে তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ায় শুরু হয়েছে তরজা।