কলকাতা: বন্দে ভারতে পাথর ছোড়া ঘিরে নতুন করে তরজা। বাংলায় নয়, বিহারে ছোড়া হয়েছে পাথর। জানাল রেল। আর এই দাবিকে হাতিয়ার করে ময়দানে নামল শাসকদলও। রেলের তরফে যে সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে, তা দেখে অভিযুক্তদের পাথর ছোড়ার দৃশ্য শনাক্ত করা হয়েছে। ৩ তারিখের (দ্বিতীয় দিনের ঘটনায়) ফুটেজ দেখে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বিহারের কিষাণগঞ্জ এলাকায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস যাওয়ার সময় হামলা হয়েছে। প্রথম দিনের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ স্পষ্ট নয় বলে জানা যাচ্ছে, যেহেতু ঘটনাটি রাতে ঘটেছে। আরও ভাল করে পরীক্ষার জন্য দুটো ফুটেজের নমুনা দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে।
তবে বাংলায় বন্দে ভারতের ওপর হামলার ঘটনায় যে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছিল, সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়েই এই ফুটেজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল বলে মনে করা হচ্ছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের যতদূর মনে হচ্ছে, যে পাথর ছোড়ার ঘটনাটি ঘটেছে, এটা বিহারে ঢোকার কিছুটা আগের এলাকা। যে বা যারা করে থাকুক, তাদেরকে ছাড়া হবে না। তদন্ত চলছে। জাতীয় সম্পত্তি নষ্ট করার যে চেষ্টা, সেটাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।”
অর্থাৎ বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়ার ঘটনায় পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তীর বক্তব্য অনুসারে বাংলা নয়, বিহারে হামলা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রাথমিকভাবে যে এলাকাটিকে চিহ্নিত করা হচ্ছে, সেটি বিহারের কিষানগঞ্জ সংলগ্ন মাগুরজান এলাকায়। এলাকা চিহ্নিত করা গেলেও সিসিটিভি ফুটেজ স্পষ্ট না থাকায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করা যায়নি।
উল্লেখ্য, বাংলা-বিহার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়েই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের গতিপথ। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ঘটনায় পাথর ছোড়ার ঘটনায় প্রথম থেকেই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব শাসকদলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছিল। ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, এই ঘটনায় রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে। কারণ এই ট্রেন উদ্বোধনের দিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে জয় শ্রী রাম স্লোগান দিয়েছিলেন দর্শক আসনে থাকা একাংশ। তা নিয়ে দৃশ্যত সেদিন মমতাকে বিরক্ত থাকতে দেখা গিয়েছিল। তিনি মঞ্চেও ওঠেননি। এদিকে, এই ঘটনায় বাঙালির মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এরপরই রেলের তরফে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ৩ তারিখের যাত্রাপথের একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনে রেল। তা দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বিহারের কিষানগঞ্জ এলাকাতেই একটি জায়গা থেকে ট্রেন লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। এই সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পরই তৃণমূল শান্তনু সেন বলেছিলেন, “বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোনও একটা সিনেমার ঘটনা দেখিয়ে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হয়েছে। বিজেপি-র যে নেতারা বাংলায় আসেন, তাঁরা বাংলাবিদ্বেষী। তাঁদের কাজই বাংলাকে বদনাম করা। শকুনের রাজনীতি হচ্ছে।” এবার সিসিটিভি এলাকা থেকে যে এলাকাকে শনাক্ত করা হচ্ছে, তাতে এই রাজনৈতিক তরজা আরও বেশ কিছুটা বাড়ল বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।