Vehicle Rule 2019: জরিমানা মকুবের দাবি, রাস্তায় নেই বেসরকারি বাস-পুল কার, অফিস-স্কুলে যাত্রা কীভাবে?

Kolkata: আগামী ৩ মাস সর্বাধিক ১৫০০ টাকা জরিমানা দিয়ে ফিটনেস সার্টিফিকেটের অনুমতি দিক রাজ্য সরকার। আবেদন বেসরকারি বাস মালিকদের

Vehicle Rule 2019: জরিমানা মকুবের দাবি, রাস্তায় নেই বেসরকারি বাস-পুল কার, অফিস-স্কুলে যাত্রা কীভাবে?
বাসে লাগাতে হবে ভাড়ার তালিকা, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 03, 2022 | 1:53 PM

কলকাতা: খুলছে স্কুল। ধীরে ধীরে খুলছে অফিস-কাছারিও। কিন্তু, যাত্রা কীভাবে? যাত্রী থাকলেও পরিবহন নেই। কারণ, রাস্তায় নামছে না অধিকাংশ বেসরকারি বাস। বাচ্চাদের জন্য দেখা মিলছে না পুলকারের। সরকারের সংশোধিত নতুন আইনে  বেড়েছে জরিমানা। ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়া রাস্তায় নামলেই দিতে হবে মোটা টাকা। উপরন্তু, পরিবহনমন্ত্রী কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কোনওভাবেই জরিমানা মকুব করা যাবে না। তাহলে উপায়? আগামী ৩ মাস সর্বাধিক ১৫০০ টাকা জরিমানা দিয়ে ফিটনেস সার্টিফিকেটের অনুমতি দিক রাজ্য সরকার। আবেদন বেসরকারি বাস মালিকদের। কিন্তু, সেকথা শুনছে কে? বাসমালিকরা বলছেন এত এত টাকা জরিমানা দিতে হলে লাভ কোথায় থাকবে! আপাতত আগামী ৩ মাসের জন্য অন্তত মকুব করা হোক জরিমানা। ততদিনে পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হবে অনেকটাই।

বেসরকারি বাস মালিকরা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ বাসের বৈধ নথি নেই। যদি পুলিশের হাতে পড়তে হয়, তাহলে দিতে হবে মোটা টাকার জরিমানা। এখন ১০ হাজার টাকা জরিমানা যদি দিতে হয়, তাহলে লাভ কীভাবে হবে? কোভিড পরবর্তী সময়ে একেই যাত্রী সংখ্যা সীমিত, তারমধ্যে রয়েছে তেলের খরচ। সম্পূর্ণ বৈধ নথি তৈরি করতে যা খরচ সেই অঙ্ক হিসেব করলে কার্যত বাস মালিকদের ‘হাতে থাকবে পেনসিল!’

শুধু বাস মালিকরাই নন, এই সমস্যায় পড়েছেন পুল কার মালিকরাও। কারণ একই। টানা প্রায় দুই বছর বন্ধ ছিল পরিষেবা। ফলে অনেক গাড়িরই বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে। এমনকি সেফটি সার্টিফিকেটও নেই। সব মিলিয়ে ঠিকঠাক নথি জোগাড় করতে যা খরচ, তাতে লাভ তো দূর, ব্যয়ের টাকাও উঠবে না। এদিকে জরুরি নথি ছাড়া সেই গাড়িগুলি রাস্তায় নামতে পারবে না। তাই আগামী ৩ মাস এই জরিমানার পরিমাণ সর্বাধিক ১৫০০ টাকা করলে অন্তত বাস ও পুল-কারের মালিকরা কিছুটা স্বস্তি পান  এবং ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে পারেন।

এদিকে,  এই জরিমানার বিরুদ্ধে পথে নেমেছে সিআইটিইউ। রাসবিহারীর মোড়ে বিশাল মিছিলের জেরে কার্যত যানজট। সিটুর তরফে দাবি করা হয়েছে, দ্রুত এই বর্ধিত জরিমানা মকুব করতে হবে।  একই সঙ্গে অভিযোগ,  মোটর ভেহিকলেস দফতরে রয়েছে  দালালরাজ। দালালরা সেই জরিমানার অংক ১০ হাজারের বদলে ৫ হাজার টাকায় মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। চালকদের প্রশ্ন, পুরোনো ফাইন বিধির বদলে নয়া বিধির টাকা চাওয়া হবে কেন? যদি সরকারি ফাইনের অংক ১০ হাজার টাকা হয়ে থাকে তাহলে দালালরা অর্ধেক টাকায় কি করে মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলছে? গোটা বিষয়টি সরকার খতিয়ে দেখুক এমনটাই দাবি তাদের। নয়ত, আরও বড় আন্দোলনের পথে নামবে তারা।

কিছুদিন আগেই পরিবহনমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, কোনওভাবেই জরিমানা কম করা হবে না। উপরন্তু, জরিমানা যাতে কোনওভাবে না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলেছেন ফিরহাদ (Firhad Hakim)। একের পর এক পথদুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে শহরে। সদ্যই রাজ্যের সংশোধিত ২০১৯ মোটর ভেইক্যাল আইন চালু হয়েছে। এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়েছে জরিমানার অঙ্ক। কিন্তু তাতে বাদ সেধেছে গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনের সংগঠনগুলি। কিন্তু পরিবহনমন্ত্রীর নির্দেশের পর কার্যত কড়া কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ।

সংশোধিত আইন অনুযায়ী, আইন ভাঙলে লাইসেন্স সাসপেন্ড করতে পারবে পুলিশ। বিনা হেলমেটে বাইক চালালে জরিমানা ১ হাজার টাকা। ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে জরিমানা ২ হাজার টাকা।  লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা। বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালালে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা।  তিন বছরের মধ্যে একই অপরাধে দশ হাজার টাকা জরিমানা। অ্যাম্বুলেন্সকে পথ না ছাড়লে ১০ হাজার টাকা জরিমানা হবে।  দমকলকে পথ না ছাড়লেও ১০ হাজার টাকা জরিমানা হবে।

প্রসঙ্গত, গত বছরই রোড ট্রান্সপোর্ট মন্ত্রকের তরফে এক নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। মন্ত্রকের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়ে দেওয়া হয়, স্টেট এনফোর্সমেন্ট এজেন্সিকে ট্র্যাফিক নিয়ম যারা ভাঙছে, সেই সমস্ত মামলাতে ১৫ দিনের মধ্যে অভিযুক্তকে নোটিশ পাঠাতে হবে। সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, স্পিড ক্যামেরা, সিসিটিভি ক্যামেরা, স্পিড গান, বডি ওয়্যারেবেল ক্যামেরা,  ড্যাসবোর্ড ক্যামেরা এবং অটোমেটিক নম্বর প্লেটকে চিহ্নিত করতে পারবে এই ডিভাইস ব্যবহার করতে পারে পুলিশ। দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা ও চালকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়।

আরও পড়ুন: Mamata Banerjee on Durga Puja 2022: ‘পুজো করে দেখিয়ে দেব…তাক লেগে যাবে গোটা দেশের’