Mamata Banerjee on Durga Puja 2022: ‘পুজো করে দেখিয়ে দেব…তাক লেগে যাবে গোটা দেশের’
Kolkata: দুর্গাপুজোর এক মাস আগে থেকে শহর জুড়ে মিছিল হবে। ইউনেস্কোকে অভিনন্দন জানানো হবে মিছিল থেকে।
কলকাতা: কলকাতার দুর্গাপুজোকে (Durga Pujo) ইনট্যানজিবল হেরিটেজ স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। এই স্বীকৃতির কৃতিত্ব কার? ইউনেস্কোর ঘোষণার পরই এই নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছিলই। সেই আবহে এ বার অভিনব ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। সরস্বতী পুজোর আগেই কার্যত দুর্গাপুজোর ঢাকে কাঠি মমতার। দুর্গাপুজোর এক মাস আগে থেকে শহর জুড়ে মিছিল হবে। ইউনেস্কোকে অভিনন্দন জানানো হবে মিছিল থেকে। ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee)। ইউনেস্কো ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই উচ্ছ্বাসপ্রকাশ করে টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে এই স্বীকৃতির বিষয়টি উল্লেখ করেন। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর এই স্বীকৃতি উদযাপনের পরিকল্পনা নতুন মাত্রা যোগ করল কৃতিত্বের লড়াইয়ে। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘এ বছর এমন পুজো হবে যাতে তাক লেগে যায় গোটা দেশের’।
বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, “ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ। আমাদের দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ তকমা দেওয়া হয়েছে। আমরা আবেদন করেছিলাম। অনেক লড়াইয়ের পর এই স্বীকৃতি। তবে, ইউনেস্কোর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। দুর্গাপুজো কীভাবে করতে হয়, দেখিয়ে দেব। খালি তো শুনি, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমি নাকি পুজো করতে দিই না! অভিনন্দন কী করে জানাতে হয়, সেটা গোটা দেশের লোক দেখবে।”
তৃণমূল সুপ্রিমোর আরও সংযোজন, “এই বছর প্রত্যেক দুর্গাপুজো কমিটিকে বলব, আগে থেকে তৈরি হোন। একমাস আগে থেকে উদযাপন চলবে। একমাস আগেই শহর জুড়ে মিছিল হবে।শঙ্খ ও উলুধ্বনির মাধ্যমে স্বীকৃতিকে উদযাপন করা হবে। মিছিলে উলুধ্বনি আর শঙ্খধ্বনি করবেন সমাজের অনগ্রসর মায়েরা আমার। তাঁরাই হবেন অগ্রণী। এই মিছিলে সকলে অংশ নেবেন। এ বছরের পুজো এমন হবে যাতে তাক লেগে যায় গোটা দেশের।”
১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত হয় ইন্টারগভর্নমেন্ট কমিটির ১৬ তম অধিবেশন। সেই অধিবেশনেই ‘কলকাতার দুর্গাপুজো’-কে ইউনেসকোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটির তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে নিযুক্ত কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “এই উৎসব ধর্ম, লিঙ্গ এবং সমস্ত অর্থনৈতিক স্তরের বাধাগুলি পেরিয়ে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করার পদ্ধতির জন্য বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।”
ইউনেসকোর ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, “দুর্গা পুজাকে ধর্ম ও শিল্পের সর্বজনীন মিলন ক্ষেত্রের সর্বোত্তম উদাহরণ হিসাবে দেখা হয় এবং সহযোগী শিল্পী ও ডিজাইনারদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ক্ষেত্র হিসাবে দেখা হয়। এই উৎসব শহুরে এলাকায় বড় আকারের পালিত হয় এবং মণ্ডপগুলির পাশাপাশি রয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢাক এবং দেবীর পূজা।” উৎসব চলাকালীন সব শ্রেণি, ধর্ম এবং জাতিগত বিভাজন ভেঙে দর্শকদের ভিড়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই গোটা প্রক্রিয়াই ভীষণভাবে প্রশংসিত হয়েছে ইউনেসকোর দরবারে। শেষবার ২০১৭ সালে এই স্বীকৃতি পেয়েছিল কোনও ভারতীয় উৎসব। সেই বছর কুম্ভ মেলাকে এই হেরিটেজের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার ছৌ লোকনৃত্য ২০১০ সালে এই স্বীকৃতি পেয়েছিল। ওই একই সঙ্গে স্বীকৃতি পেয়েছিল কেরলের মুদিয়েত্তু লোক নৃত্যনাট্য এবং রাজস্থানের কালবেলিয়ে লোকগীতি। এর পাশাপাশি কুটিয়াত্তম সংস্কৃত থিয়েটার, রামলীলা, বৈদিক জপের ঐতিহ্য এবং লাদাখের বৌদ্ধ নাম-জপও এই স্বীকৃতি পায়। সেপ্টেম্বরে, পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন দফতর কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। পরবর্তীতে রাজ্যের প্রস্তাবকে সমর্থন করে কেন্দ্র এবং বিষয়টি ইউনেসকোর কাছে পেশ করা হয়। এরপর আজ ইউনেসকোর নয়াদল্লি অফিসের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে এই স্বীকৃতির কথা নিশ্চিত করা হয়।