কলকাতা: দুর্নীতির আবহে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে নজরদারি চায় বিজেপি। বিশ্বকর্মার সুবিধা পাইয়ে দিয়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে কি তিন লক্ষ কর্মী নিয়ে বাহিনী গড়তে চায় গেরুয়া শিবির? রাজনৈতিক মহলে জল্পনা। শিল্পী কারিগরদের জন্য ইতিমধ্যেই চালু করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বকর্মা যোজনা। দরজি, রাজমিস্ত্রি-সহ ১৮ পেশার কর্মীরা ঋণ পাবেন এই যোজনার আওতায়। রাজ্যভিত্তিক ইতিমধ্যে নামের তালিকা পাঠানোরও নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। এ বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতিগুলির প্রধানের ওপর দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু তাতে ভরসা করতে পারছে না বিজেপি। তাই তাতে নজরদারি চালাতে চায় বিজেপি।
চব্বিশের নির্বাচনের আগে একটা বড় পদক্ষেপ করেছে বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি চাইছে একটি বুথ ভিত্তিক সুসংহত, ঐকবদ্ধ কর্মীশিবির গঠন করতে। কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্পে যখন রাজ্যে এসেছে, তখন রাজ্যের সব স্তরের মানুষের জন্য সেই পরিষেবা বন্টন হয়নি বলে অভিযোগ রাজ্যের বিরোধী শিবিরের। সেক্ষেত্রে রাজ্যের শাসকদলকে বারবার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিজেপি।
কিন্তু সূত্রের খবর, বিজেপি চাইছে এবারে কেন্দ্রের এই প্রকল্প নিয়েও যাতে কোনও দুর্নীতি না হয়। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, রাজ্যের বিরোধী শিবির চাইছে, বুথ ভিত্তিক পাঁচ জনের নাম পাঠিয়ে, তাঁদের প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিয়ে যাতে নির্বাচনের আগে কর্মীবাহিনী তৈরি করা যায়। রাজ্য বিজেপি এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে বুথ ভিত্তিক সব কমিটিকে নিদের্শ দিয়েছে । কোথাও তৃণমূল বাধা দিলে বা বিজেপি মনোভাবাপন্ন কর্মীদের নাম বাদ দিতে চাইলে, প্রতিবাদের পাশাপাশি রাজ্য দফতরে নামের তালিকা পাঠাতে হবে। এই জন্য আলাদা টিম রাজ্য দফতরে থাকবে ।
এই প্রকল্পে আবাসন প্রকল্প বা আয়লার অর্থ সাহায্য মতো রাজ্য সরকারের উপর সবটা থাকছে না । কেন্দ্রীয় সরকার কারা এই প্রকল্প টাকা পাবে , তা ঠিক করবে ।
আবেদন করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারের কমন সার্ভিস প্রকল্পের ওয়েবসাইটে।
প্রসঙ্গত, জন্মদিনে দেশের জন্য বিশেষ প্রকল্প ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নাম দিয়েছেন পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা। ছোট বড় ক্ষুদ্র, মাঝারি বিভিন্ন মাপের নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত যে সমস্ত কারিগররা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা। যদিও শাসকদলের তরফে অভিযোগ উঠছে, টাকা দিয়ে আদতে বাংলার ভোট কিনতে চাইছে বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের অপর অংশের ব্যাখ্যা, বাংলায় একশো দিনের কাজ কিংবা অন্যান্য প্রকল্পগুলি নিয়ে বিজেপির যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, রাজ্যের তরফেও টাকা বন্ধের যে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সেরকম আর কোনও সুযোগ দিতে চাইছে না বিজেপি।
এপ্রসঙ্গে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “যাঁরা ছোট মাপের কারিগর রয়েছেন, তাঁদের জীবন যাতে একটু মসৃণ হয়, তার জন্য সারা ভারতে এই চেষ্টা চলছে। অর্থ দিয়ে তো আর ভোট কেনা যায় না। অর্থ দিয়ে ভোট কেনার পরিকল্পনা যে করে, সে মানুষকে অপমান করে।”