কলকাতা: একদিকে আরজি করে গণ কনভেনশন। অন্যদিকে থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারদের নতুন সংগঠন। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন(WBJDA) নামে ওই সংগঠনের তরফে শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করলেন অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তাররা। একইসঙ্গে এতদিন ধরে চলা জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুললেন তাঁরা।
ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন শ্রীশ চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় হয়ে চলেছে। আরজি কর কাণ্ডের পর আমরা বলেছিলাম, কর্মবিরতি নয়, রোগীর পরিষেবা দেব আন্দোলন করে। তখন আমাদের বহিষ্কার করে আমাদের কলেজে ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর আদালতের নির্দেশে আমরা ডিউটিতে যোগ দিই। অনিকেত মাহাতো মুখ্যমন্ত্রীর সামনে আমাদের দুষ্কৃতী বলে সম্মানহানি করেছেন।”
আর এক ইন্টার্ন সৌরভ কুমার দাস প্রশ্ন তোলেন, “তিলোত্তমার নামে বিচার চেয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করেছে। তিলোত্তমার নামে ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা তোলা হয়েছে। যারা তিলোত্তমার নামে টাকা তুলেছে, তারা কি দুষ্কৃতী নয়?” তিনি বলেন, “আমরা প্রথম তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে সরব হই। আমাদের সঙ্গে মানুষ ছিল। কিন্তু পরে দেখতে পাই তিলোত্তমাকে ব্যবহার করে অনেক ডাক্তার নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করেছে।”
তাঁরাই থ্রেট কালচারের শিকার বলে দাবি করে ইন্টার্ন সৌরভ দাস বলেন, “আমরা থ্রেট কালচারের শিকার। কিছু উগ্রপন্থী মনোভাবাপন্ন লোকজনের জন্য আন্দোলনের মুখটা পাল্টে গেল। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাদের মূল বক্তব্য ছিল, তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেই তুমি দোষী। দোষ প্রমাণ করার দরকার নেই।” একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর অনুরোধ, “আপনি এক পক্ষের বক্তব্য শুনেছেন। আমাদের পক্ষ শোনেননি।”
ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের(WBJDF) পাল্টা এই সংগঠন নিয়ে জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো বলেন, “গণতান্ত্রিক পরিবেশে সবাই সংগঠন করতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই সংগঠনের ভূমিকা ও উদ্দেশ্য কী? যাঁরা থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত, তাঁরা যদি সংগঠন করে সামাজিক দায়িত্বের কথা বলে, ন্যায়বিচারের কথা বলে, তবে তা হাস্যকর হয়। তাঁদের সংগঠনের বৃদ্ধি হোক। কিন্তু, কী উদ্দেশ্য নিয়ে সংগঠন করছে, তা সামনে আসা উচিত।”
জুনিয়র ডাক্তার কিঞ্জল নন্দ বলেন, “আমাদের গণতান্ত্রিক দেশ। গণতান্ত্রিক অধিকার সকলের রয়েছে। যে কেউ সংগঠন গড়তেই পারেন। তাতে আপত্তির কোনও কারণ নেই। তবে আমার মনে হয়, মানুষের কাছে পক্ষ নেওয়ার সময় এসেছে। যে পক্ষ নিয়ে মানুষ বলতে পারবেন, তাঁরা কাদের পক্ষে রয়েছেন। তাঁরা প্রতিবাদের পক্ষে রয়েছেন, নাকি বিচারের পক্ষে, নাকি থ্রেট কালচারের পক্ষে রয়েছেন।