কলকাতা: আকাশে যেন ফুটো হয়ে গিয়েছে। বুধবার রাত থেকে সেই যে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমেছে, তা সকালেও থামার নাম নেই। এদিকে, রাতভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন শহর কলকাতা। আশেপাশে জেলাগুলিও ভাসছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে চাষে। এর মধ্যেই আরও ভয়ের পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের। আজ অতি বর্ষণের আশঙ্কা উত্তরবঙ্গে। দক্ষিণবঙ্গেও বেশ কিছু জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
সকাল থেকেই একনাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে কলকাতায়। সকালে ও দুপুরে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি থাকলেও বেলার দিকে বৃষ্টি কিছুটা কমতে পারে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তবে আকাশ মেঘলা থাকবে। বৃষ্টির জেরে তাপমাত্রাও অনেকটা কমেছে। আজ কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪.৯ ডিগ্রি। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮.১ ডিগ্রি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৯২ থেকে ৯৪ শতাংশ। বৃষ্টি হয়েছে সামান্য ৬২.৯ মিলিমিটার।
আজ দিনভর বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস। আগামিকালও আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে। বিক্ষিপ্তভাবে দু-এক পশলা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উপরে তৈরি নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে ঘূর্ণাবর্তে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ ছত্তীসগঢ়ের উপরে রয়েছে একটি ঘূণাবর্ত। একটি অক্ষরেখা রয়েছে উত্তর কঙ্কন থেকে দক্ষিণ বাংলাদেশ পর্যন্ত, যা ছত্তীসগঢ়ের ঘূর্ণাবর্তের এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে গিয়েছে।
ঘূর্ণাবর্তের জেরেই আজ উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কা। অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং সহ পার্বত্য এলাকায়। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কোচবিহারে এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। শুক্রবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস উত্তরবঙ্গে। শুক্রবারেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে কালিম্পং এবং আলিপুরদুয়ার জেলাতে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে দার্জিলিং ও কোচবিহার জেলাতে।
অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গে পশ্চিমের বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা। কলকাতা সহ সব জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সকালের দিকে বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টি হলেও বেলার দিকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা পুরুলিয়া পশ্চিম বর্ধমান বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদ জেলাতে।
তবে শুক্রবার থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হবে। বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায়।
লাগাতার বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় ধস নামার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে নদীর জলস্তরও অনেকটাই বাড়তে পারে। কোথাও কোথাও নদীর জলস্তর বিপদসীমার ওপরে উঠতে পারে। এর জেরে নিচু এলাকায় প্লাবনের আশঙ্কা। বৃষ্টির জন্য পার্বত্য এলাকার রাস্তায় দৃশ্যমানতা কমতে পারে। বজ্রপাতের আশঙ্কা থাকায় নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।