কলকাতা: মাঘের শুরু। কিন্তু শীত (winter) কোথায়? উল্টে বৃষ্টির দাপট। আপাতত, ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বঙ্গে দাপাবে বৃষ্টি। বাইরে বেরলে সঙ্গে রাখুন ছাতা। বলছে হাওয়া অফিস।
আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা তো আছেই। সঙ্গে বাংলাদেশের উপর তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তের জেরে কার্যত প্রচুর জ্বলীয়বাষ্প বঙ্গে প্রবেশ করছে। ফলে বৃষ্টিকাঁটা থেকে রেহাই মিলছে না এত সহজে। কলকাতা তো বটেই, দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলাগুলিতেই মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূমে শিলা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২৫ জানুয়ারি মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
বুধবার বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে পাঁচ জেলায়। উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টি হতে পারে। ইতিমধ্য়েই রবিবার থেকে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে হালকা বৃষ্টি শুরু হয়েছে। যার জেরে বিস্তর ক্ষতি হয়েছে চাষের। এই সময়টাই মূলত আলু চাষের মরসুম। শুধু আলুচাষ নয়, মরসুমি ফুলচাষেরও সময় এটিই। তাতেও বিস্তর ক্ষতি। আর সবজিচাষের এই ব্যাপক ক্ষতিতে টান পড়ছে মধ্যবিত্তের হেঁশেলে।
কলকাতায় সোমবারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা মূলত স্বাভাবিকের থেকে ৪ ডিগ্রি কম। অন্য়দিকে রাতের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেশি। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৪ শতাংশ। আপাতত ২৬ তারিখ পর্যন্ত চলবে বৃষ্টি।
ভরা মাঘে এমন অকাল বৃষ্টির কারণ হিসাবে আবহাওয়াবিদরা পশ্চিমী ঝঞ্ঝাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। সম্প্রতি একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে মধ্য ভারত হয়ে সরাসরি বঙ্গে প্রবেশ করছে। যার জেরে পিছু হাঁটতে বাধ্য হয়েছে শীত। উল্টে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়ে চলেছে। এই বৃষ্টি কাঁটাতেই আটকে গিয়েছে শীতও। শিরশিরে হাওয়া থাকলেও, জাঁকিয়ে শীত কার্যত উধাও। আগামী সপ্তাহে বৃহস্পতিবারের পর থেকে ফের তাপমাত্রা নিম্নমুখী হতে পারে। শীতও অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সেই শীত কতদিন স্থায়ী হবে তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে আবহাওয়াবিদদের মনেও।
কিন্তু, আশঙ্কার শেষ এখানেই নয়। জলবায়ু বদলের চক্করে ভুগতে পারে বাংলা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ‘হ্যাজার্ড অ্যাটলাস’-এও সেই প্রতিফলন ঘটেছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, জলবায়ু বদলের ইঙ্গিত তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে বাড়ছে ঝড়, বন্যা, অতিবর্ষণ, বজ্রপাত ও খরার বিপদও। ঘূর্ণিঝড়ের বিপদের তালিকায় রয়েছে দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর। এই তিন জেলায় রয়েছে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও। খরা দেখা দিতে পারে বীরভূম ও নদিয়ায়। অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা ও হাওড়া বাদে গোটা রাজ্যে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee on IAS Cadre Rules: ‘টিপটাপ, চুপচাপ আইপিএসদের তুলে নিয়ে চলে যাবে…মগের মুলুক নাকি!’