কলকাতা: তিনি পোড় খাওয়া রাজনীতিক। তবে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে প্রথম নির্বাচনী জয়ের স্বাদ পেলেন একুশের ভোটে। তিনি মুকুল রায় (Mukul Roy)। উনিশের লোকসভা ভোট থেকে একুশের বিধানসভা, বিজেপির স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণে বিশেষ ভূমিকা তাঁর। একদিকে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি অন্যদিকে নদিয়ার কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে বিধায়ক হিসেবে সদ্য নাম তুলেছেন। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তিনি কি এবার বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা? কিন্তু তার মধ্যেও এখন বড় কৌতূহল, কোথায় মুকুল?
বাংলায় ভোটের আবহে মুকুলের নিষ্পৃহতা বড্ড বেশি চোখে লেগেছে। প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপিতে দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা যেমন গুরুত্ব পেয়েছেন, তা কি পাচ্ছেন না মুকুল রায়? যদিও বিজেপির যে ক’জন হেভিওয়েট প্রার্থী এবার জয়ের স্বাদ পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মুকুল রায়।
এদিকে ২ মে ভোটের ফলপ্রকাশের পর মুকুলের কোনও বিবৃতি নেই। তাঁকে ফোন করে পাওয়া যাচ্ছে না। তৃণমূলের তারকা প্রার্থী কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে ৩৫ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করা মুকুল কোথায়? নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পর কি নিজেকে আড়ালে রাখছেন? এমন অনেক প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলার রাজনীতির অলিন্দে।
সূত্রের খবর, সল্টলেকের নিজের বাড়িতে থাকলেও এই মুহূর্তে সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন। কয়েকজন কর্মীদের মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে ভোটের ফল প্রকাশের পর রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক হিংসা ছড়ানো, বিজেপি কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় ধরনার ডাক দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। শোনা যাচ্ছে, বুধবার তাঁর সঙ্গে বৈঠকে থাকবেন মুকুল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় মোটামুটি সক্রিয় তিনি। কিন্তু সেখানেও তাঁর শেষ টুইট গত ৩০ এপ্রিল। সাংবাদিক রোহিত সারদানার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে এক টুইটবার্তার পর মাইক্রো ব্লগিং সাইটে আর উপস্থিতি নেই মুকুলের।
২০ বছর তৃণমূলে কাটানোর পর ২০১৭ সালে বিজেপিতে গিয়ে একুশের ভোটের প্রার্থী হয়েছেন মুকুল রায়। ভোটে লড়াই সেই ২০ বছর পর। তখন তিনি ছিলেন বিরোধী নেত্রী মমতার সঙ্গে। এবার লড়াই সেই মমতারই বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: মুকুলের জয়-মমতার হার, জিতল তৃণমূলই
২০০১ সালের ১৩ মে জগদ্দলে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী হরিপদ বিশ্বাসের কাছে হেরে গিয়েছিলেন মুকুল রায়। ২ দশক বাদে, ২০২১ সালের ২ মে মুকুলের রাজনৈতিক জীবনে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হলেও, আপাতত তিনি অন্তরালে। কারণ কিন্তু অজানা।