কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর ইডির তরফে বলা হয়েছিল, ‘পেঁয়াজের খোসা যত ছাড়ানো হবে, ততই তথ্য বেরোবে’। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষেত্রেও বোধহয় ধীরে ধীরে এ কথাই খাটতে চলেছে। গরু পাচার মামলায় অনুব্রতর গ্রেফতারির পর তাঁর বিভিন্ন সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলেই দাবি সিবিআই সূত্রের। শুক্রবার তদন্তকারীরা গিয়েছিলেন বীরভূমের ভোলে ব্যোম রাইস মিলে। সেখান গিয়েও চক্ষু চড়কগাছ। চালের কলে কি না রাখা হয়েছে পাঁচ পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়ি। সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের হাতে উঠে এসেছে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও। এরইমধ্যে সূত্রের খবর, বীরভূমের ‘কেষ্ট’র দু’টি মোবাইল ফোন হায়দরাবাদে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি বা সিএফএসএলে (CFSL) পাঠাতে চাইছে সিবিআই।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা মনে করছে অনুব্রত মণ্ডলের মোবাইল ফোনে লুকানো থাকতে পারে গরু পাচার সংক্রান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্যপ্রমাণ। এই মোবাইল ঘেঁটে আরও নতুন নতুন দিক-দর্শনও হতে পারে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। হতে পারে, এই ঘটনায় প্রভাবশালী যোগ কতটা, তাও উঠে আসতে পারে অনুব্রতর মোবাইল ফোন থেকে। সে কারণেই ফোন দু’টি পরীক্ষা করাতে চায় তারা।
ইতিমধ্যেই আদালতকে এ সংক্রান্ত আবেদন জানিয়েছেন সিবিআই। বৃহস্পতিবার তারা আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে আবেদন জানায়। শনিবার অনুব্রত মণ্ডলকে যখন ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ শেষে আদালতে তোলা হবে, সেখানে মোবাইল ফোন সংক্রান্ত আবেদনেরও শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, তদন্তকারীরা মনে করছেন, অনুব্রত মণ্ডলের কল ডিটেইল তাঁদের হাতে রয়েছে ঠিকই। কিন্তু মোবাইল ফোনেও লুকিয়ে থাকতে পারে আরও তথ্য।
বিভিন্ন ছবি ছাড়াও, ভিডিয়ো, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট, পিডিএফ বা ডকুমেন্টস অনুব্রত মণ্ডলের রোজকার ব্যবহারের ফোন থেকে পাওয়া যায় কি না, সেটাই নজরে সিবিআইয়ের। তারা মনে করছে, মোবাইল ফোন দু’টির তথ্য উদ্ধার করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এ রাজ্যে তা হয় না। তাই হায়দরাবাদে পাঠানোর তোড়জোড় করছে সিবিআই। প্রসঙ্গত, শনিবার অনুব্রত মণ্ডলকে আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হবে। সকাল ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে অনুব্রতর হাজিরা দেওয়ার কথা রয়েছে।