কলকাতা : রাশিয়া – ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ নিয়ে বলতে গিয়ে ভারত সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটারে এমনই অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই টুইটটি আবার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ট্যাগও করেছেন তিনি। টুইটারে শুভেন্দু লিখেছেন, “অবিশ্বাস্য! মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সব সীমা ছাড়িয়ে রাশিয়া – ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য কেন্দ্রকে দায়ী করেছেন।” সেই সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “তাঁর (মুখ্যমন্ত্রীর) মন্তব্য যে কূটনৈতিক স্তরে ভারতের বিরুদ্ধে যেতে পারে, মুখ্যমন্ত্রী জানেন না। বিদেশমন্ত্রী দেখুন যাতে এই ক্ষতি সামাল দেওয়া যায়।”
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কী বলেছিলেন? কীসের ভিত্তিতে এমন অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা? ঘটনাটি ২৯ মার্চ অর্থাৎ গতকালের। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, “আমি দিল্লিকে (কেন্দ্রীয় সরকারকে) বলেছিলাম, একটা অনুমতি করে দিন, ওখানে যাঁরা পড়তেন, তাঁদের এখানে পড়ানোর খরচ আমি বিনামূল্যে করিয়ে দেব। কিন্তু সংসদে তার উত্তর দিয়েছে, হবে না। জমিদারি নাকি… হবে না? যুদ্ধ লাগানোর আগে তোমার ভাবা উচিৎ ছিল কি না আমাদের ছেলেগুলো যখন ফিরে আসবে কী খাবে, কোথায় যাবে, কোথায় পড়বে? যদি পড়ুয়াদের জন্য কোনও সহানুভূতি থাকে, তাহলে আমি দাবি করছি এই পড়ুয়াদের বাংলায় এবং গোটা দেশে পড়তে দিন।”
Unimaginable !!!
Hon’ble CM @MamataOfficial exceeded her limit yesterday & accused the Centre of stoking war between Russia and Ukraine.
Isn’t she aware that these words could be used against India diplomatically? Our Foreign Policy & International Relations might get impacted.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) March 30, 2022
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বকে প্রশ্ন করা হলে, তারা অবশ্য বিষয়টিকে পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন। তৃণমূলের বক্তব্য, শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। ইউক্রেন – রাশিয়া যুদ্ধ বাধার পরেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ভারত সরকারের পাশে থাকার বার্তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় জানিয়েছেন, “কোনও মূর্খ যদি কোনও জিনিসের ব্যাখ্যা মূর্খের মতো করে, সেই মূর্খের ব্যাখ্যা তো যে মানুষ সম্যক অবহিত আছেন, তিনি কী প্রতিক্রিয়া দেবেন। পৃথিবীর সবাই জানে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিত কী এবং কেন সেখানে সংঘর্ষ চলছে। সেখানে ভারতের যে বিদেশনীতি, তাতে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীই সারা দেশের একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যিনি কেন্দ্রকে চিঠি লিখে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।”
তবে বিষয়টিকে ইস্যু করার কোনও সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না বঙ্গ বিজেপি। মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়িয়ে বিজেপি বক্তব্য, তাঁর জন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে অস্বস্তিতে পড়তে হল ভারতকে। শমীক ভট্টাচার্য এই বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রী বিরোধিতা করতে করতে এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছেন। ভারতের মতো পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের একজন দায়িত্বশীল অঙ্গরাজ্যের নেত্রী যদি এ কথা বলেন, তাহলে এর থেকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে, কূটনৈতিক ক্ষেত্রে দেশ অস্বস্তির মধ্যে পড়তে পারে। বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। আবার উল্টোটাও হতে পারে। সেই জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীর এই কথা হতাশাজনক।”