কলকাতা: সিবিআইয়ের ‘সেটিং’ তত্ত্ব শুনিয়েছিলেন একদিন আগেই। ‘বিতর্কিত’ সেই মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কি দলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে গেল বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের? হেস্টিংসে দলীয় কার্যালয়ে সাংগঠনিক বৈঠক। সেই ভবনে উপস্থিতও রয়েছেন দিলীপ। অথচ বৈঠকের ঘরে দেখা গেল না তাঁকে। একলা বসে রইলেন আটতলার ঘরে। বৈঠকে গরহাজির তিনি। যা ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহল, বঙ্গ বিজেপির ঘরের কোন্দল কি আর যাবে না?
কী হয়েছে? সোমবার হেস্টিংসে বিজেপির কার্যালয়ে বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠক ছিল। সেখানে দলের প্রথম সারির নেতারা উপস্থিত থেকে সংগঠনের রণকৌশল ঠিক করবেন, কথা ছিল তেমনটাই। কীভাবে বিরোধীদের বিঁধবেন, সেই ছকও তৈরির কথা। অথচ পাল্টা বিজেপির অন্দরের আকচাআকচির ছবি ধরা পড়ল এদিন। হেস্টিংসে আটতলায় বসেছিলেন দিলীপ ঘোষ। চারতলায় ছিল বৈঠক। একবারও সেখানে নাকি দেখা যায়নি দিলীপ ঘোষকে। কার্যালয়ে থেকেও কেন দলের এমন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে দিলীপ থাকলেন না, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলছেন, “হতে পারে উনি হয়ত কোনও কাজে ব্যস্ত ছিলেন তাই আসেননি। অথবা হয় একটা মিটিং শুরুর পর অনেক সময় দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই জন্য হয়ত বুঝতে পারেননি আমাদের মিটিং হচ্ছে।” দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা বিজেপি অফিসে যাতায়াত করছেন, তাঁরা বলছেন, এমন ঘটনা তাঁরা কস্মিনকালে দেখেননি। দিলীপ ঘোষকে এদিনের বৈঠকে ডাকা হয়েছিল এবং শেষে কোর কমিটির বৈঠক ছিল। যেখানে সর্বভারতী সহ-সভাপতির উপস্থিতি আবশ্যক।
অথচ দেখা গেল দিলীপ ঘোষ সন্ধ্যা ৬টায় হেস্টিংসের অফিসে এলেন। বৈঠকে দেখা গেল না। সুকান্ত মজুমদার, সর্বভারতীয় পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যরা থাকলেও দেখা গেল না দিলীপকে। সূত্রের খবর, দরজা বন্ধ থাকায় ঢুকতে পারেননি তিনি। আটতলায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পরও সে ঘরে ‘প্রবেশাধিকার’ মিলল না। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা ৪০ পর্যন্ত সেখানে থেকে বেরিয়ে গেলেন কার্যালয় ছাড়লেন দিলীপ। সুকান্ত মজুমদার তার আগে সাড়ে ৮টা নাগাদ বেরিয়ে যাওয়ার আগে বলে গেলেন, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে বৈঠক করছিলেন। তাই দিলীপ ঘোষ হয়ত জানতে পারেননি। এই ঘটনার পর প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহল, তবে কি বঙ্গ বিজেপি কোণঠাসা করতে চাইছে দিলীপকে?
কারণ, সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে বলতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ এদিনও বলেছেন, তিনি প্রশ্ন তুলবেনই। কারণ, তাঁর বুকে ব্যথা আছে। তাঁর দলের কর্মীদের মৃতদেহ মালা পরাতে হয়েছে তাঁকে। দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্য বুঝিয়ে দিচ্ছে, বাকিরা যাই ভাবুক না কেন, তিনি কোনওভাবেই তাঁর বক্তব্য থেকে সরছেন না।