কলকাতা: দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) একাধিক মন্তব্যই বিতর্ক তৈরি করেছে বিভিন্ন সময়ে। তবে এবার দিলীপ ঘোষের বক্তব্য কিছুটা বিড়ম্বনাতেও ফেলেছে তাঁকে। কুড়মি সম্প্রদায় নিয়ে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য ঘিরে গত ২-৩ দিন ধরে তুমুল হইচই জঙ্গলমহলে। বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতির বাড়ি ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি থেকে তাঁকে সামাজিক বয়কটের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। আর এসবের মধ্যেই বঙ্গ বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া পেজে একটি পোস্ট। সেখানে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখা হয়েছে. ‘…কুড়মি সমাজ বঞ্চনার শিকার, তাদের এই আন্দোলনকে সম্মান জানাই এবং তাঁদের আন্দোলনের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা আছে।… শ্রী দিলীপ ঘোষ, সর্বভারতীয় সহ সভাপতি।’ সোমবার সকালেও যে দিলীপ ঘোষের মুখে শোনা গিয়েছে, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে কাপড় খুলে দেব আমি। দিলীপ ঘোষের পিছনে যেন লাগতে না আসে।’ বিকেলে বিজেপির ফেসবুক পেজে পোস্ট করা ভিডিয়োয় সে সুর যেন কিছুটা নমনীয়। এদিকে ততক্ষণে আবার কুড়মিদের তরফে দিলীপ ঘোষকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে ক্ষমা না চাইলে ৫০ হাজার লোক নিয়ে দিলীপের বাড়ি ঘেরাওয়েরও ডাক দেওয়া হয়।
এদিন বঙ্গ বিজেপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে যে ভিডিয়োটি পোস্ট করা হয়েছে, সেটি মেদিনীপুরের লোধাশুলির। সেখানে দিলীপ ঘোষকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “বিজেপি কারও সঙ্গে ঝগড়া করতে যায় না। আমার এলাকায় যাঁরা বসেছিলেন তাঁদের আমি সহযোগিতা করেছি। রোদ্দুরে গরমে তাঁরা কষ্টে ছিলেন বলে আমি সেখানে লোক পাঠিয়েছি, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি কিছু বলতে যাইনি, তাঁরা যখন আমার রাস্তা আটকেছেন তখন প্রশ্ন করেছি কী করেছেন তাঁরা। আর চাইলে আমি সংবাদমাধ্যমের সামনে নাম নিয়ে বলব কে নেতা, কী করেছে। তাই তাঁরা যাঁরা নিজেদের সমাজের জন্য আন্দোলন করছেন, অধিকার নিয়ে করুন। আমাদের সহমর্মিতা আছে। রাজনীতি করতে গেলে রাজনীতির উত্তর দিতে হবে।”
গত রবিবার ঝাড়গ্রামের শিলদাতে দলীয় কর্মসূচি ছিল দিলীপ ঘোষের। সেখান থেকে লালগড়ে দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে দিলীপ ঘোষের রাস্তা আটকান কুড়মি সম্প্রদায়ের লোকজন। গাড়ি থেকে নেমে আসেন দিলীপ। তাঁকে নানা অভিযোগের কথা জানান কুড়মিরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, কুড়মিদের এসটি তালিকাভুক্তির জন্য বিরোধী দলের নেতা ও একজন সাংসদ হিসাবে তিনি কী করেছেন তা বলতে হবে। দিলীপ ঘোষ জানান, তিনি কুড়মিদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করেছেন। তাঁদের আন্দোলনের সময় চাল ডাল দিয়েছেন। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে কুড়মি সমাজ। ঘাগর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুমন মাহাতো জানান, সাংসদকে প্রকাশ্যে জানাতে হবে, তিনি কাকে সহযোগিতা করেছেন। না হলে তাঁকে ঘাঘর ঘেরার পাশাপাশি জঙ্গলমহলে বয়কট করা হবে।