পূর্ব মেদিনীপুর: আচার্য বদল এক সহজ নয়, সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করবেন বিজেপি বিধায়করা। বৃহস্পতিবার এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন বিকেলে ভগবানপুরের বাজকুলে কেন্দ্রীয় সরকারের এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “খুব স্পষ্টভাবে বলে দিলাম, চান্সেলার পরিবর্তন এত সহজ না। এক, বিধানসভায় বিল আনতে হবে। ভারতীয় জনতা পার্টির বিধায়করা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করবে। সেই বিল মহামান্য রাজ্যপালের কাছে পাঠাতে হবে। শুধু তাই নয়, শুনে রাখুন, শিক্ষা কেন্দ্র-রাজ্যের যৌথ দায়িত্বে আছে। সে কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন নিতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব ইচ্ছা আমরা পূরণ হতে দেব না।” বৃহস্পতিবারই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যপালের পরিবর্তে আচার্য হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী থাকুন। আইন সংশোধনে এই সিদ্ধান্ত এবার যাবে বিধানসভায়। পাশ হলেই নতুন নিয়ম বলবৎ হবে। তবে এ ক্ষেত্রে রাজ্যপালের অনুমোদনও জরুরি।
এদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “রাজ্যের মন্ত্রিসভা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের যত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, তার আচার্য পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম থাকবে। এটা এবার বিধানসভায় যাবে। তারপর আইন হিসাবে বলবৎ হবে।”
যদিও এই সিদ্ধান্তের ঘোর নিন্দা করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিসভায় নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে গেল। এরকম ঘটনা সারা ভারতে আর কোথাও হয়নি। স্বল্পবিস্তর প্রচেষ্টা হয়েছে। তামিলনাড়ুতে আয়ুশ মেডিকেল কলেজে আচার্য হিসাবে রাজ্যপালকে রাখা হয়নি। কেরলেও বিবাদ হয়েছে। এরকম নির্ণয় হয়নি।” কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “সার্বভৌম ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার চেষ্টা এসব। আগামিদিনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এটাই দেখা যাবে।” অন্যদিকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “আসলে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চাই। শিক্ষাক্ষেত্রে ভাইস চান্সেলারদের উপরেও তিনি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চান।”
যদিও শিক্ষাবিদদের একাংশের মতে, রাজ্যপালের কারণেই এই সিদ্ধান্ত। শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি বলেন, “একজন রাজ্যপাল তো সাংবিধানিক প্রধান। রাজ্যপাল হিসাবে একজন সহায়ক অভিভাবকের ভূমিকা নেওয়ার কথা। এমন নয় যে তিনি সব বিষয়ে মাথা গলাবেন। কিন্তু তিনি একটা দলের সঙ্গে বসে মন্ত্রণা করছেন, তারপরই ডেকে পাঠাচ্ছেন। এই প্রবৃত্তি বারবার দেখা গেল। তাতে তাঁকে খুব পক্ষপাতগ্রস্ত মানুষই মনে হয়।”