কলকাতা: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে নালিশ দায়ের করল এপিডিআর। তাদের অভিযোগ, বুধবার কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার দেবজিত্ চট্টোপাধ্যায়কে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন, তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। বিজেপির কর্মী ও সমর্থকরা তাঁর উপর চড়াও হয়েছিল। আপাতত এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। এদিন বিকেলে কলকাতা পুলিশের ওই আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলেছেন, আক্রান্ত পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে। তাঁর পরিবারের লোকেদের সঙ্গেও কথা বলেন। কথা হয় কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সঙ্গে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি বা এপিডিআর (APDR) দাবি করে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে যা বলেছেন, তা উস্কানিমূলক, আইন সম্মত নয়। এপিডিআরের সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ শূর জাতীয় মানবাধিকারি কমিশন, দিল্লির দফতরে একটি ইমেল মারফত জানান, ‘তিনি বলেছেন, তিনি ওই পুলিশ অফিসারের পদে থাকলে কপালে গুলি করতেন। আগেরদিন বিজেপির মিছিল চলাকালীন বিক্ষোভকারীদের পুলিশ ভ্যানে হামলা বা পুলিশ কর্মীকে মারধরের প্রসঙ্গে বলেন।’ রণজিৎ শূর লেখেন, তাঁদের আবেদন বিষয়টি মানবাধিকার কমিশন দেখুক এবং কলকাতা পুলিশকে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিক। এই ধরনের প্ররোচনামূলক বক্তব্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমান।
মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযান ছিল। সেই অভিযানকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে শহর ও শহরতলিতে। এই ঘটনায় একদিকে ছিল পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা, অন্যদিকে বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের অভিযান সফলের মরিয়া চেষ্টা। অভিযান শুরু হতেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বিভিন্ন এলাকা। কলকাতা থেকে হাওড়া ব্রিজের মুখে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় সেদিন। আহত হন কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার দেবজিত্ চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে দেখতে বুধবার এসএসকেএম হাসপাতালে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে বেরিয়ে অভিষেক বলেন, “দেবজিৎবাবুকে বললাম, আমি আপনাকে স্যালুট জানাই, আপনি কিছু করেননি। আপনার জায়গায় যদি আমি থাকতাম, আমার সামনে যদি পুলিশের গাড়িতে আগুন জ্বলত, আমি মাথার উপরে শুট করতাম।”
মঙ্গলবার আহত হন বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীও। হাওড়া জেলা হাসপাতালে আহত বিজেপি কর্মীদের দেখতে যান বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল। সেখানে তিনি বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কি সুপার পুলিশ মন্ত্রী হতে চাইছেন ? সিনেমার মতো ডায়লগ না দিয়ে বিজেপি কার্যকর্তাদের উপর একবার গুলি করে দেখুন না!” অন্যদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “সাধারণ মানুষ একেবারেই সমর্থন করেনি। দিশেহারা বিজেপি। শেষ পর্যন্ত ইট, পাথর, অশান্তি, পুলিশের গাড়িতে আগুন, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা… এগুলিই করেছে। এই বিজেপির কোনও জনভিত্তি নেই।”