কলকাতা: লালবাতি ব্যবহার নিয়ে রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, চার সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে হলফনামা জমা দিতে হবে রাজ্যকে। তার দু’ সপ্তাহের মধ্যে জবাবি হলফনামা দেবে মামলার সঙ্গে যুক্ত অন্যরা। আগামী ১৯ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি হবে। প্রসঙ্গত, তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেন আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। আদালতে তিনি জানান, কী কারণে অনুব্রত মণ্ডল তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার করেন তার জবাব চাওয়া দরকার। শুধু তাই নয়, আদালত সূত্রে খবর, অনুব্রত যে লালবাতি লাগানো গাড়িটি ব্যবহার চড়েন, সেখানে একটি চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নাম লেখা আছে। তরুণজ্যোতি তিওয়ারি প্রশ্ন তোলেন, যদি এ গাড়ি কোনও ট্রাস্টেরও হয়, তারাই বা কীভাবে লালবাতি লাগানোর অনুমতি পেল? আদালত রাজ্যের কাছে এ সংক্রান্ত জবাব তলব করেছে।
গত মাসের শেষের দিকে তরুণজ্যোতি তিওয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তরুণজ্যোতির বক্তব্য ছিল, “পশ্চিমবঙ্গে যতগুলি গাড়িতে বেআইনিভাবে নীলবাতি, লালবাতি লাগানো হয়েছে, সেগুলি খুলতে হবে। যাঁরা বেআইনিভাবে এই গাড়ি ব্যবহার করেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। এটা একটা অদ্ভুত সংস্কৃতি চলছে পশ্চিমবঙ্গে। তৃণমূলের কেষ্ট বিষ্টু যে যেখানে নেতা আছেন, সকলেই ভিআইপি যেন। এটা গণতন্ত্রে মানা যায় না। এর বিরুদ্ধেই এই মামলা।”
গরুপাচার মামলায় সম্প্রতি অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করেছিল সিবিআই। যেদিন তাঁকে ডাকা হয়, সেদিনই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। হাসপাতালে যে গাড়ি থেকে অনুব্রত নেমেছিলেন, সেই গাড়ির মাথায় লাগানো ছিল লালবাতি। মূলত লালবাতির গাড়ি দু’রকমের হয়। একটি ফ্ল্যাশ যুক্ত লালবাতির গাড়ি, অন্যটি ফ্ল্যাশ বিহীন লালবাতির গাড়ি। ফ্ল্যাশ যুক্ত লালবাতির গাড়িতে চড়তে পারেন রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, বিধানসভার অধ্যক্ষ, রাজ্য সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, হাইকোর্টের বিচারপতি। অন্যদিকে ফ্ল্যাশবিহীন লালবাতির গাড়িতে চড়ার অধিকারী রাজ্য সরকারের প্রতিমন্ত্রীরা, বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার, কলকাতা পুরসভার মেয়র, রাজ্য সরকারের মুখ্যসচিব।