কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টে ফের ধাক্কা রাজ্যের। মেডিক্যালের মেধাতালিকা (Merit List) খারিজের নির্দেশ আদালতের (Calcutta High Court)। রাজ্যের এ বছরের এমবিবিএস (MBBS)-এর প্রকাশিত মেধা তালিকা খারিজ করল হাইকোর্ট। দুঃস্থ শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের নির্দেশ ছিল। সেই নির্দেশ কার্যকর না হওয়ায় সোমবার বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় এই নির্দেশ দেন। এর ফলে রাজ্যে সরকারি কোটায় চিকিৎসক নিয়োগে জটিলতা তৈরি হল বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। এই তালিকা বাতিল করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে আগামী সাতদিনের মধ্যে বিধি মেনে নতুন মেধা তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তিস্তা দাস নামে এক নিট (NEET) উত্তীর্ণ মামলা দায়ের করেন।
মামলাকারী তিস্তা দাস নিটে সাফল্য লাভ করে রাজ্যের মেধাতালিকায় স্থান পান। কিন্তু তাঁর দাবি, মোট ৩ হাজার ৪১৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০ শতাংশ দুঃস্থদের জন্য সুনিশ্চিত করাই হয়নি। মাত্র ২৩৪ (৬%) জনকে এই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। মামলাকারীর আইনজীবী তরুণকুমার দাস জানান, এই নিয়ম না মানার কারণে তাঁর মক্কেল যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও অনেক দূরে সিট পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সওয়াল জবাব শেষে এদিন বিচারপতি ওই তালিকাই খারিজ করে দেন।
এ বিষয়ে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ তথা চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেন বলেন, “বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বিতর্কিত কিছু বলব না। তবে একথা আমরা বলতে পারি, যখন আমরা পড়াশোনা করেছি, তখন হাতেগোনা কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ, কয়েকটি মাত্র এমবিবিএস-এর আসন ছিল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিগত ১১ বছরে যে পরিমাণ মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করেছেন তা দৃষ্টান্ত। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার এমবিবিএস ডাক্তারি আসনও তৈরি করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীরা চিকিৎসার জগতে যাওয়া বা মেডিক্যাল নিয়ে পড়াশোনা করার অনেক সুযোগ পেয়েছেন। সুতরাং আদালতের সেই বিষয়টি দেখা উচিত। কারণ একটা নির্দেশের উপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে।”
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার টুইটারে নিটের ফলাফল নিয়ে সরব হন। সাংসদ শান্তনু সেনের মেয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি সাংসদ। সুকান্তের অভিযোগ, শান্তনু সেনের মেয়ে সৌমিলি সেন নিট পাশ না করেই মেডিক্যাল পড়ছেন। পাল্টা শান্তনু সেনও সরব হন, “রাজনীতির ময়দানে লড়াই করতে ব্যর্থ হয়ে পরিবার এবং বাচ্চাদের টেনে আনার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আমার মেয়ে মেধাবী ছাত্রী। বায়োকেমিস্ট্রি অনার্সেও তাঁর ভাল ফল। নিট পাশ না করে কেউ মেডিক্যালে ভর্তি হতে পারেন না।” মানহানির মামলারও হুঁশিয়ারি দেন শান্তনু।