কলকাতা : সোমবার সকাল থেকেই ইন্টিগ্রেটেড কন্ট্রোলরুম খোলার নির্দেশ। শনিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের বৈঠকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া নিয়ে মাইকিং করতে বলা হয়েছে মূলত উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে বসবাসকারী মানুষদের জন্য। উপকূলবর্তী জেলাগুলিকে নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কোনও মৎস্যজীবী সমুদ্রে মাছ ধরতে না যায়। উদ্ধারকাজের সমস্ত রকম প্ল্যান তৈরি করে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৭ টি দলকে তৈরি রাখা হয়েছে। রাজ্যের রিকুইজিশন এলে প্রয়োজনমতো তাদের রিলিজ করা হবে। বিশেষ করে সুন্দরবন অঞ্চলে সাইক্লোন শেল্টারগুলিতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাইক্লোন শেল্টারগুলিতে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণের ব্যবস্থা থাকে, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঝড়ের প্রস্তুতির প্রসঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উল্গানাথন জানিয়েছেন, “ঘূর্ণিঝড়ের জন্য আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া আছে। আমরা বিভিন্ন স্তরে বৈঠক করেছিল। গ্রাম ও ব্লক স্তর থেকে শুরু করে মহকুমা স্তর পর্যন্ত – প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈঠক হয়েছে। ইতিমধ্য়েই আমরা একটি ইন্টিগ্রেটেড কন্ট্রোলরুম চালু করেছি জেলার সদর দফতর। এর পাশাপাশি এসডিও এবং বিডিওরাও কন্ট্রোলরুম চালু করেছে। কিছু সমস্যা হলে কন্ট্রোল রুম থেকে যোগাযোগ করে নেওয়া হবে। মৎসজীবীদের সংগঠনের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। কোস্ট গার্ড ও কোস্টাল থানাগুলিও সতর্ক রয়েছে। যে নৌকাগুলি সমুদ্র রয়েছে, সেগুলিও ফিরে আসবে। ত্রিপল, জামাকাপড়, চাল সহ সমস্ত ত্রাণ সামগ্রী পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রাখা হয়েছে। সাইক্লোন শেল্টারগুলিও প্রস্তু রাখা হয়েছে।”
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন আন্দামান সাগরের উপর নিম্নচাপটি তৈরি হয়েছে, সেটি উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়েছে, একটি আরও ঘনীভূত হয়েছে। বর্তমানে এটি কার নিকোবর (নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ) থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং পোর্ট ব্লেয়ার (আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ) থেকে প্রায় ৩০০ কিমি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। নিম্নচাপটি এখন বিশাখাপত্তনম থেকে ১২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এবং পুরী থেকে ১৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে।
পরবর্তী সময়ে এটি ৮ মে’তে আরও শক্তি বাড়িয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ১০ মে সন্ধে পর্যন্ত এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে এটি উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলের কাছে পশ্চিম-মধ্য এবং সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পারে। তারপরে, এটি উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে এগিয়ে ওড়িশা উপকূলে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের দিকে এগিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।