কলকাতা: মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বানে বিপর্যস্ত অমরনাথ। ১৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে এখনও পর্যন্ত। নিখোঁজ অন্তত ৪০ জন পুণ্যার্থী। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে ২৫ থেকে ৩০টি তাঁবু। এ রাজ্য থেকেও বহু মানুষ অমরনাথ যাত্রা করেছেন। প্রতি প্রহর উদ্বেগে কাটছে তাঁদের পরিবারের। বিপর্যয়ের কারণে মোবাইলের নেটওয়ার্কে চরম সমস্যা হচ্ছে অমরনাথে। ফলে বাড়িতে যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না অনেকেরই। যেমন লেকটাউনের দক্ষিণদাঁড়ির বিপুল ঘোষের পরিবার। শুক্রবার বিকাল থেকেই উৎকণ্ঠায় চোখের পাতা এক হচ্ছে না পরিবারের।
শুক্রবার বিপুল ঘোষের মা ও স্ত্রী বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। বহু চেষ্টার পর ফোনে পান। তাঁর মা রিক্তা ঘোষ জানান, “এই ফোন না পাওয়া অবধি আমাদের তো গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল। খুব চিন্তায় ছিলাম। টিভিতে এরকম দেখছি। ওদিকে ছেলেটাও ওখানে গেছে। জানি তো না কী পরিস্থিতিতে আছে। খুব চিন্তায় ছিলাম। বৌমা ফোনে অনেক কষ্টে যোগাযোগ করতে পেরেছে। ছেলে ভাল আছে শুনে একটু চিন্তাটা কমেছে।”
বিপুলবাবুর বাবা গোপাল ঘোষ জানান, ছেলে গত ৫ তারিখ গিয়েছে। এখান থেকে ৮ জন গিয়েছেন, পুরুলিয়া থেকে আরও ২ জন। গোপালবাবুর কথায়, “টিভিতে খবরটা দেখার পর যে কী অবস্থা হয়েছিল, সেটা বলে বোঝানো যাবে না। ছেলে কোথায় আছে, কী অবস্থায় আছে কিছুই তো জানতাম না। পরে ফোনে কথা বলে একটু শান্তি পাই।”
গত ৫ জুলাই মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন পেশায় ব্যবসায়ী, লেকটাউনের বাসিন্দা ৪৫ বছরের বিপুল ঘোষ। সঙ্গে কেষ্টপুরের সাত বন্ধু এবং পুরুলিয়ার দুই বন্ধু। সব মিলিয়ে দশজনের গ্রুপ। প্রায় মধ্যরাতে গ্রুপের এক সদস্যের ফোন থেকে অবশেষে লেকটাউনের বাড়িতে যোগাযোগ করতে পারেন বিপুল ঘোষ। জানান, তাঁরা নিরাপদে আছেন। পহেলগাঁও বেস ক্যাম্পে রয়েছেন। এগোতেও পারেননি, এখন ফেরারও উপায় নেই। বাবা তাড়াতাড়ি নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসুক, ভগবানের কাছে এখন একটাই প্রার্থনা বিপুলবাবুর ছেলে বিশ্বরূপের।