কলকাতা: ‘কবিতা বিতান’ কবিতাসমগ্রের জন্য বিশেষ পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কার পেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রবীন্দ্রসদনে ২৫ বৈশাখের অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ বছর থেকেই এই পুরস্কার চালু করা হল। আর প্রথম বছরই এ সম্মান পেলেন মুখ্যমন্ত্রী। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের মধ্যেও যাঁরা ‘নিরলস সাহিত্য সাধনা’ করে চলেছেন তাঁদেরই এই সম্মান দেওয়া হবে। এদিন বাংলা আকাদেমির চেয়ারম্যান ব্রাত্য বসু বলেন, “সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে নিরলস কাজ করার পরও যাঁরা সারস্বত সাধনা, সাহিত্য সাধনা করে চলেছেন তাঁদের এই পুরস্কার অর্পণ করা হবে।” ব্রাত্য বসু জানান, বাংলার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকদের মতামত নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বেছে নেওয়া হয়েছে। ব্রাত্য বলেন, “সমস্ত শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক জানিয়েছেন প্রথম বছর এই পুরস্কার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হোক। তাঁর কবিতা বিতান কাব্যগ্রন্থকে সামনে রেখে বাংলা সাহিত্যচর্চায় তাঁর নিরলস সাধনা ও সামগ্রিক কৃতীর জন্য পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির এই বিশেষ পুরস্কার অর্পণ করা হবে।”
প্রসঙ্গত ২০২০ সালের বইমেলায় উদ্বোধন করা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কবিতা বিতান’। এই বইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ৯৪৬টি কবিতা রয়েছে। জাগো বাংলার স্টলে এই বইয়ের উদ্বোধন হয়। রাজ্য চালানোর পাশাপাশি কবিতা, গান, ছবি আঁকার প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ আগ্রহের কথা সকলেরই জানা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁকে গান, কবিতার পংক্তি বলতে শোনা যায়। বিভিন্ন জেলা সফরে গিয়ে একাধিকবার তাঁকে হাতে রং তুলি তুলে নিতেও দেখা যায়।
প্রশাসনিক ব্যস্ততা, রাজনৈতিক নানা কর্মসূচির মধ্যেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সাহিত্য চর্চা বিভিন্ন সময় আলোচিত হয়েছে। তাঁর কবিতা বিতান গীতবিতানের মতোই বৃহদায়তন বলেন তাঁর অনুগামীরা। একটি বইয়ে ৯৪৬টি কবিতা। শুধু বাংলা ভাষাতেই নয়, উর্দু, ইংরাজি, সাঁওতালি ভাষাতেও লেখা রয়েছে তাঁর। বিভিন্ন সময়ে তিনি নিজেও বলেছেন, একাধিক ভাষা তিনি জানেন। তাতে লেখেনও। তবে এদিনের অনুষ্ঠানে আগামী প্রজন্মকে তিনি বার্তা দেন, যতই বিদেশি ভাষা শিখুক না কেন, নিজের ভাষাকে ভাল করে জানতেই হবে। এই ভাষা চর্চাই এগিয়ে নিয়ে যায় একটা জনজাতির কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে। যদিও এদিন আকাদেমির এই বিশেষ পুরস্কার নিজের হাতে নেননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর হয়ে এই সম্মান গ্রহণ করেন ব্রাত্য বসু।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই পুরস্কার পাওয়া নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় কটাক্ষ করেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। তিনি লেখেন, ‘আজ হয়তো কবিগুরু আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু এনাকে রেখে গেছেন… রবি ঠাকুরের পর, একমাত্র বাঙালি যিনি আমাদের “সাহিত্যে” দ্বিতীয় নোবেলের আশা জাগাচ্ছেন !!! [**বি:দ্র: মাঝে মাঝে, নিজেই নিজের লেখা “আং-বাং” কবিতার উপর নিজেকে পুরস্কার দিয়ে থাকেন]।’