কলকাতা: অবশেষে জামিন পেলেন কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। ১ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান তিনি। যে কৌস্তভের গ্রেফতারিতে সকাল থেকে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি, যাঁর গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। শনিবারই তাঁকে জামিন দেয় ব্যাঙ্কশাল আদালত। শনিবার কৌস্তভের শুনানিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শুনানিকক্ষ। আদালতের বাইরেও বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। এদিন কৌস্তভের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘আমার মক্কেল কি সন্ত্রাসবাদী? পুলিশকে এত সাহস কে দিল? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে রাতে কারও বাড়িতে যেন না হানা দেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘দিন এমন আসছে, সরকারি কর্মচারী গ্রেফতার, নওশাদ গ্রেফতার, এবার আইনজীবী গ্রেফতার। যিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁর লেখা দেখুন। রাত ৩টের সময় কী করে পুলিশ যায়?’ কৌস্তভের বিরুদ্ধে যেসব ধারা দেওয়া হয়েছে, অধিকাংশই জামিনযোগ্য। এদিন বিচারক (অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১) অতনু মণ্ডলের এজলাসে কৌস্তভের মামলার শুনানি হয়।
এদিন আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ৪১ এ নোটিশ নেই, তারপর রাতে গিয়ে কীভাবে গ্রেফতার? ‘আগামিদিনে তো বিচারপতির বিরুদ্ধে পুলিশ এমন করতে পারে’, বলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট বলছে, মাঝরাতে কারও বাড়ি যেতে না, তারপরও কীভাবে এত রাতে কৌস্তভের বাড়িতে পুলিশ গেল, প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ও। বিকাশবাবু বলেন, ‘ঘুমনো একজনের ফান্ডামেন্টাল রাইট।’ শুনানি চলাকালীন চরম হট্টগোল শুরু হয় আদালত কক্ষে। অভিযুক্তের আরেক আইনজীবী বলেন, তদন্তকারী অফিসারকে শোকজ করা হোক। জানতে চাওয়া হোক ৪১ এ নোটিস কেন দেয়নি? কৌস্তভের জামিনের আবেদন করেন তিনি। একইসঙ্গে বলেন, ‘আমরা আইনজীবীরা আতঙ্কিত। গণতান্ত্রিক দেশে আইনজীবীর বাড়িতে রাতে পুলিশ গিয়ে হামলা করছে। এটা কি সন্ত্রাসবাদীর ঘর?’
পাল্টা সরকারি আইনজীবী বলেন, বেশ কিছু বক্তব্য প্রকাশ্যে অশান্তির জন্য করা হয়েছে। এর তদন্ত প্রয়োজন। দু’পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল-জবাব শেষে অর্ডার রিজার্ভ রাখার কথা বলেন বিচারক। এরপরই আদালত কক্ষে শুরু হয় চরম হট্টগোল। কোনও অর্ডার রিজার্ভ রাখা যাবে না, ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দিতে হবে, দাবি করেন আইনজীবীরা। তুমুল হট্টগোল শুরু হয় আদালতে। বিচারক অর্ডার না দিলে তাঁরা আদালতকক্ষ ছাড়বেন না বলেন। হট্টগোলের জেরে বিচারক নিজের আসন ছেড়ে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। আইনজীবীরা দাবি করেন, রায় না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা অন্য কোনও মামলার শুনানি করতে দেবেন না। পরে কৌস্তভের জামিনের নির্দেশ দেন বিচারক। পরবর্তী শুনানি ৫ এপ্রিল।