কলকাতা: ত্রিপুরায় জোট করেই লড়ছে বাম-কংগ্রেস (Left-Congress Alliance)। বাংলাতেও একুশের বিধানসভা ভোটে এ ছবি দেখা গিয়েছে। অন্যান্য ভোটেও ‘সমঝোতা’র পথেই হেঁটেছেন সেলিম, অধীররা। সামনে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট। প্রশ্ন উঠছে, এবার কি তবে গ্রাম দখলের লড়াইয়েও ‘হাতে’ থাকবে ‘কাস্তে, হাতুড়ি’? ইতিমধ্যেই এ জল্পনা উস্কে দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মহম্মদ সেলিমের কথায়, “পঞ্চায়েত ভোটের সময় আমরা বলেছি, লুটেরাদের হাত থেকে পঞ্চায়েত কাড়তে হবে। চোর জোচ্চোরদের তাড়াতে হবে। তার জন্য গ্রাম জাগাতে হবে। গ্রাম জাগানো মানে মানুষকে জাগানো। মানুষকে জাগানো মানেই তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী সমস্ত শক্তিকে জাগানো। তার জন্য বামফ্রন্টের ঐক্যকে যেমন দৃঢ় করব। বাম মনস্ক যত মানুষ আছেন, প্রগতিশীল যত মানুষ আছেন, ধর্মনিরপেক্ষ যত মানুষ আছেন তাঁদের বলি আসুন এককাট্টা হই। বামফ্রন্টের নেতৃত্বে আমরা মানুষের হাতে যাতে পঞ্চায়েত ফেরত দিতে পারি, যাদের জন্য এই পঞ্চায়েত গড়ে উঠেছিল।” তবে বাম-কংগ্রেস জোটের জল্পনা ভেসে উঠতেই, বেশ কিছু প্রশ্নও উঠে আসছে। ১. তৃণমূলকে চাপে ফেলতেই কি এই কৌশল? ২. কোন পাটিগণিত মাথায় রেখে এই জোটের পথে হাঁটা? ৩.পঞ্চায়েত স্তরে কংগ্রেসের সংগঠন কোথায়?
জোটের জল্পনা বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। ইদানিং রাজ্যের মাদ্রাসা পরিচালন সমিতি, স্কুল পরিচালন সমিতি, কৃষি সমিতির ভোটের ক্ষেত্রে তৃণমূল বিরোধিতায় স্থানীয় স্তরে পতাকা ছাড়াই বাম-কংগ্রেস সমর্থকদের একসঙ্গে লড়তে দেখা গিয়েছে। যদিও এ ছবি নতুন নয়। এর আগে বামেরা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তৃণমূল-বিজেপি-কংগ্রেসকেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে দেখা গিয়েছে।
সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করেছে সিপিএম। তাতে জোটের হাওয়া আরও প্রবল। সোমবার মুর্শিদাবাদে মহম্মদ সেলিম বলেন, “আমরা কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করছি। যখন পঞ্চায়েত ভোট হবে, বামফ্রন্ট আবার বসবে, আলোচনা হবে।”
এর আগেও কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের হাত ধরা প্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিম বলেছিলেন, স্থানীয় স্তরে আলোচনা করে যা সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হবে, সেটাই মান্যতা পাবে। তবে মানুষ যে জোট করবে, সে বার্তাও দেন তিনি। এবার আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে সেলিম একেবারে স্পষ্ট করে দিলেন, তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে যে লড়াই, তাতে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি যারা বামফ্রন্টের বাইরেও রয়েছে, তাদের সঙ্গে নিয়েও লড়াই হবে। তা হলে কি আবার একুশের পুনরাবৃত্তি দেখা যাবে, থাকছে প্রশ্ন। কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “বাংলার যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলায় বাম ও কংগ্রেসকে একত্রিত হওয়া একান্তভাবে প্রয়োজন।’ তবে বাকিটা আলোচনার মাধ্যমেই ঠিক হবে বলে মানছে বাম-কংগ্রেস।