কলকাতা: ন্যাশনাল মেডিকেল কাউন্সিলের (NMC) নয়া ভাবনা ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এমবিবিএস পড়ুয়াদের মহর্ষি চরকের শপথ নিতে হবে। এ বছর থেকে হোয়াইট কোট সেরিমনির সময় থাকছে না ‘হিপোক্র্যাটিক ওথ’ নয় এমনই ভাবনা রয়েছে তাদের। ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হচ্ছে। তার আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিটি মেডিকেল কলেজের সঙ্গে বৈঠক হয় এনএমসির। সেখানেই ‘হিপোক্র্যাটিক ওথ’-এর বদলে মহর্ষি চরক শপথ নিয়ে আলোচনা হয়। ব্রিটিশ আমল থেকে হিপোক্র্যাটিক ওথের প্রথা চলে আসছে। চিকিৎসক হওয়ার লক্ষ্যে প্রথম বছর থেকে যখন পড়ুয়াদের পড়াশোনা শুরু হয়, সেই সময়ই এই শপথ নেওয়া হয়। এবার এনএমসি ভাবছে আয়ুর্বেদের জনক হিসাবে যিনি পরিচিত, সেই মহর্ষি চরকের ‘চরক সংহিতা’ থেকে শপথবাক্য তুলে ধরতে। কিন্তু চিকিৎসকদের একাংশের মতে, বিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের পথেই দেখা উচিৎ। ভুললে চলবে না, সনাতন ভারতবর্ষের ঐতিহ্য হল ‘চরৈবেতি’।
শপথ বদলের পাশাপাশি ১০ দিন ধরে যোগাভ্যাসের প্রশিক্ষণের প্রস্তাবও দিয়েছে এনএমসি। অর্থাৎ চিকিৎসক পড়ুয়াদের প্রতিদিন সূর্য প্রণাম, প্রাণায়ম, ধ্যানের ক্লাস করানো হবে। প্রতি বছর প্রশিক্ষণ শেষে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে পালিত হবে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসও। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক সাংসদ তথা ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি শান্তনু সেন বলেন, “আন্ডার গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল এডুকেশন বোর্ডের যিনি প্রেসিডেন্ট তাঁর পৌরহিত্যে একটি বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকের রেজোলিউশন নম্বর ২-এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এবার আর হিপোক্র্যাটিক ওথ নেওয়া হবে না। আমি নিজে যেহেতু ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশনের সদস্য তাই চেয়ারম্যানকে ফোন করেছিলাম। উনিও জানান, এ বিষয়ে জানেন না।”
শান্তনু সেনের দাবি, “কমিশনের চেয়ারম্যান আমাকে বলেন, মহারাষ্ট্র মেডিকেল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট বিষয়টি জানান। কমিশনের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে উনি খোঁজ নিচ্ছেন। আন্ডার গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল এডুকেশন বোর্ডের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলবেন। আমাকেও কথা বলতে অনুরোধ করেন। যদিও আমার ফোন বেজে গিয়েছে, উল্টোদিকে কেউ রিসিভ করেননি। যতক্ষণ না ওনার সঙ্গে কথা হচ্ছে বিষয়টির সত্যতা বা আসলে কী করতে চাইছে আমরা বুঝতে পারছি না। তবে এটুকু বলে দিতে পারি এটা যদি সত্যি হয় মর্ডান মেডিসিনের চিকিৎসকরা কিন্তু চুপ করে বসে থাকবেন না। মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন পথে নামবে।”
শান্তনু সেন বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার শতাব্দী প্রাচীন আয়ুর্বেদ, যোগা, হোমিওপ্যাথি, ন্যাচারোপ্যাথি আপগ্রেড করতে পারছে না। কিন্তু জাতীয় শিক্ষা নীতি কিংবা ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশনের বিভিন্ন অধ্যায়ের মধ্যে রেখে একটা খিচুড়ি পরিস্থিতি তৈরি করে ভারতের মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলার চেষ্টা করছে। এর বিরুদ্ধে আগেও আমরা আন্দোলন করেছি। এটা সত্যি হলে মেডিকেলের লোকজন চুপ করে বসে থাকবেন না।”
এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, “একদিকে বলছি, ভারতবর্ষকে সারা বিশ্বের অঙ্গনে মেলে ধরব। সারা বিশ্বের ভাবনাচিন্তা, বিজ্ঞানের ধারার সঙ্গে ভারতবর্ষের চিকিৎসক, চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের এক করব। সেখানে দাঁড়িয়ে শুধু চরক সংহিতা পড়িয়ে আর যোগ শিক্ষা দিয়ে বিশ্বের অঙ্গনে তুলে ধরা যাবে, আমি মনে করি না। ভারতের ঐতিহ্য সবসময় সামনের দিকে পথ হাঁটে। আমার মনে হয় এসবে সময়ের অপব্যবহার ছাড়া কিছুই হবে না। একদিকে বলছি, ভারতের ভ্যাকসিন সারা দুনিয়ায় পা ফেলতে চলেছে। সে সময় এটা যেন সেই অন্ধকারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা, যেখানে বলা হচ্ছে গণেশের নাকের প্লাস্টিক সার্জারি হচ্ছে ভারতীয় ঐতিহ্যের অনুসারী।”
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
কলকাতা: ন্যাশনাল মেডিকেল কাউন্সিলের (NMC) নয়া ভাবনা ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এমবিবিএস পড়ুয়াদের মহর্ষি চরকের শপথ নিতে হবে। এ বছর থেকে হোয়াইট কোট সেরিমনির সময় থাকছে না ‘হিপোক্র্যাটিক ওথ’ নয় এমনই ভাবনা রয়েছে তাদের। ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হচ্ছে। তার আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিটি মেডিকেল কলেজের সঙ্গে বৈঠক হয় এনএমসির। সেখানেই ‘হিপোক্র্যাটিক ওথ’-এর বদলে মহর্ষি চরক শপথ নিয়ে আলোচনা হয়। ব্রিটিশ আমল থেকে হিপোক্র্যাটিক ওথের প্রথা চলে আসছে। চিকিৎসক হওয়ার লক্ষ্যে প্রথম বছর থেকে যখন পড়ুয়াদের পড়াশোনা শুরু হয়, সেই সময়ই এই শপথ নেওয়া হয়। এবার এনএমসি ভাবছে আয়ুর্বেদের জনক হিসাবে যিনি পরিচিত, সেই মহর্ষি চরকের ‘চরক সংহিতা’ থেকে শপথবাক্য তুলে ধরতে। কিন্তু চিকিৎসকদের একাংশের মতে, বিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের পথেই দেখা উচিৎ। ভুললে চলবে না, সনাতন ভারতবর্ষের ঐতিহ্য হল ‘চরৈবেতি’।
শপথ বদলের পাশাপাশি ১০ দিন ধরে যোগাভ্যাসের প্রশিক্ষণের প্রস্তাবও দিয়েছে এনএমসি। অর্থাৎ চিকিৎসক পড়ুয়াদের প্রতিদিন সূর্য প্রণাম, প্রাণায়ম, ধ্যানের ক্লাস করানো হবে। প্রতি বছর প্রশিক্ষণ শেষে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে পালিত হবে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসও। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক সাংসদ তথা ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি শান্তনু সেন বলেন, “আন্ডার গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল এডুকেশন বোর্ডের যিনি প্রেসিডেন্ট তাঁর পৌরহিত্যে একটি বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকের রেজোলিউশন নম্বর ২-এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এবার আর হিপোক্র্যাটিক ওথ নেওয়া হবে না। আমি নিজে যেহেতু ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশনের সদস্য তাই চেয়ারম্যানকে ফোন করেছিলাম। উনিও জানান, এ বিষয়ে জানেন না।”
শান্তনু সেনের দাবি, “কমিশনের চেয়ারম্যান আমাকে বলেন, মহারাষ্ট্র মেডিকেল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট বিষয়টি জানান। কমিশনের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে উনি খোঁজ নিচ্ছেন। আন্ডার গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল এডুকেশন বোর্ডের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলবেন। আমাকেও কথা বলতে অনুরোধ করেন। যদিও আমার ফোন বেজে গিয়েছে, উল্টোদিকে কেউ রিসিভ করেননি। যতক্ষণ না ওনার সঙ্গে কথা হচ্ছে বিষয়টির সত্যতা বা আসলে কী করতে চাইছে আমরা বুঝতে পারছি না। তবে এটুকু বলে দিতে পারি এটা যদি সত্যি হয় মর্ডান মেডিসিনের চিকিৎসকরা কিন্তু চুপ করে বসে থাকবেন না। মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন পথে নামবে।”
শান্তনু সেন বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার শতাব্দী প্রাচীন আয়ুর্বেদ, যোগা, হোমিওপ্যাথি, ন্যাচারোপ্যাথি আপগ্রেড করতে পারছে না। কিন্তু জাতীয় শিক্ষা নীতি কিংবা ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশনের বিভিন্ন অধ্যায়ের মধ্যে রেখে একটা খিচুড়ি পরিস্থিতি তৈরি করে ভারতের মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলার চেষ্টা করছে। এর বিরুদ্ধে আগেও আমরা আন্দোলন করেছি। এটা সত্যি হলে মেডিকেলের লোকজন চুপ করে বসে থাকবেন না।”
এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, “একদিকে বলছি, ভারতবর্ষকে সারা বিশ্বের অঙ্গনে মেলে ধরব। সারা বিশ্বের ভাবনাচিন্তা, বিজ্ঞানের ধারার সঙ্গে ভারতবর্ষের চিকিৎসক, চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের এক করব। সেখানে দাঁড়িয়ে শুধু চরক সংহিতা পড়িয়ে আর যোগ শিক্ষা দিয়ে বিশ্বের অঙ্গনে তুলে ধরা যাবে, আমি মনে করি না। ভারতের ঐতিহ্য সবসময় সামনের দিকে পথ হাঁটে। আমার মনে হয় এসবে সময়ের অপব্যবহার ছাড়া কিছুই হবে না। একদিকে বলছি, ভারতের ভ্যাকসিন সারা দুনিয়ায় পা ফেলতে চলেছে। সে সময় এটা যেন সেই অন্ধকারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা, যেখানে বলা হচ্ছে গণেশের নাকের প্লাস্টিক সার্জারি হচ্ছে ভারতীয় ঐতিহ্যের অনুসারী।”
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা