কলকাতা: বকেয়া বুঝে নিতে সোমবার বেসরকারি সংস্থার অফিস ঘেরাও করলেন গ্রাম বাংলার দুধচাষিরা। রাজ্য সরকারের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বেসরকারি সংস্থাকে দুধ সরবরাহ করে বিপাকে পড়েছেন গো-পালকরা। গত ১০ মাসে ছ’কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বলে অভিযোগ। টিভি নাইন বাংলায় সেই খবর দেখে শুক্রবার দুধচাষিদের টাকা মেটানোর ব্যাপারে আশ্বাস দেন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে ডেকে কড়া বার্তা দেওয়ার কথা জানান দফতরের শীর্ষ কর্তাও। দুধচাষিদের কাছে বেসরকারি সংস্থার বক্ত ব্য ছিল, সরকারের ঘরে ২০ কোটি টাকা তাদের পাওনা রয়েছে। তাই দুধচাষিদের বকেয়া মেটাতে পারছে না তারা। উৎপাদন বন্ধ বর্ধমানের নবাবহাট প্ল্যান্টেও।
যদিও মন্ত্রীর এ বিষয়ে বক্তব্য, বেসরকারি সংস্থার টাকা বকেয়া রয়েছে ঠিকই। তবে একেবারেই টাকা মেটানো হয়নি এমনও নয়। এই পরিস্থিতিতে সোমবার বেসরকারি সংস্থার অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান দুধচাষিরা। ফোনে দফায় দফায় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় দু’পক্ষের মধ্যে। গত ১০ মাস ধরে টাকা না পেয়ে পিঠ ঠেকে গিয়েছে দুধচাষিদের। টাকা কেন দিতে পারছেন না তা দুধচাষিদের সরাসরি জানানোর জন্য বলা হয় বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে। শেষ পর্যন্ত দফতরের এক কর্তার উপস্থিতি এ বিষয়ে আলোচনায় বসার আশ্বাস দেন বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর। আশ্বাস পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দুধচাষিরা।
রাজ্য সরকারের সঙ্গে বেসরকারি সংস্থার জয়েন্ট ভেঞ্চার। সেখানেই দুধ বিক্রি করে বিপাকে পড়েছেন নদিয়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদের দুধচাষিরা। প্রচুর টাকা তাঁদের বকেয়া বলে অভিযোগ। সোমবার আলিপুরে ওই বেসরকারি সংস্থার অফিসেও যান তাঁরা। এক দুগ্ধচাষির কথায়, “২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা পাই। ঋণ করে সেই টাকার ব্যবস্থা করেছিলাম। মেটাতে পারছি না। সংসারে অশান্তি। দু’বছর ধরে বাড়িতেই থাকতে পারি না। আমরা যাঁর কাছে টাকা পাব, সেই যদি টাকা না দেয়, কী করব আমরা?”
আরেক দুধচাষি বলেন, “আমরা গরীব মানুষ। দুধ বিক্রি করলেও টাকা পাইনি। এদিকে যাঁদের কাছ থেকে এই দুধ নিয়ে এসেছি, তাঁরা এখন আমাদের বাড়িতে এসে চড়াও হচ্ছে।” দুধ সরবরাহকারী অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “আমরা দেখা করলাম। বললেন দেরী হয়েছে ঠিকই। দু’ একদিনের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবেন। আমরা অপেক্ষায় থাকব। তবে না জানালে আবার আসব। আবার ঘেরাও হবে।”