কলকাতা: প্রথম থেকেই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল এই বৈঠক ঘিরে। অবশেষে সেই অনিশ্চয়তার জল্পনায় জল ঢালল স্বাস্থ্য ভবন। জানিয়ে দিল অনশন না তুললে বৈঠক নয়। মঙ্গলবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Kolkata Medical College) অনশনকারীদের সেই বার্তাই দেয় স্বাস্থ্যভবন। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানান, বৈঠক বাতিল। তিনি জানান, শনিবার অনশনকারীদের অনশন তুলে নির্বাচনের দিন নিয়ে আলোচনার টেবিলে ডেকেছিলেন স্বাস্থ্য সচিব। সেইমতো মঙ্গলবার বৈঠকের দিন ঠিক করা হয়। কিন্তু এরপর চারদিন কেটে গেলেও অনশন ওঠেনি। এরপর এক অনশনকারী অসুস্থ হলে সোমবার স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য নিজে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ পৌঁছে অনশনকারীদের একই অনুরোধ করেন। তাতেও বরফ গলেনি। সূত্রের খবর, এরপরই রাজ্য প্রশাসন কড়া অবস্থান নেয়। আর তার জেরেই বাতিল হয়ে গেল স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠক।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বারবারই সোমবার বলেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূত হয়ে এসেছেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে এসেছেন। চন্দ্রিমা ভট্টচার্যের বক্তব্য ছিল, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এখানে এসেছি। যাঁরা এখানে আন্দোলন করছে, যে পাঁচজন অনশন করছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বললাম। আমার অনুরোধ ছিল অনশনটা তোলা হোক। ওরা যে নির্বাচনের কথা বলছে, সে নির্বাচন নিশ্চিতভাবে হবে। ছাত্র সংসদের নির্বাচন হবেই। তবে এই মুহূর্তে বিভিন্ন জায়গায় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরীক্ষা চলছে। ফলে নির্বাচনের ঠিক তারিখ বলা এখনই সম্ভব নয়। এতদিন নির্বাচন হয়নি কারণ কোভিডের প্রোটোকল ছিল। এমনকী এখনও কোভিডের সব প্রোটোকল তোলা হয়নি। ফলে আমরা সবদিকে নজর রেখেছি। সংসদের নির্বাচন তো নিশ্চয়ই হবে। তবে সেটা কবে হবে তা কথা বলে ঠিক করা হবে।”
ইতিমধ্যেই চিকিৎসক নেতা মানস গুমটা প্রশ্ন তুলেছেন, একটা কলেজের ছাত্র সংসদের ভোটে মন্ত্রী থেকে স্বাস্থ্য সচিব সকলে ছুটে এসেও সমাধান সূত্র পাচ্ছেন না। তা হলে আর কলেজ কাউন্সিলের পদে বসে থেকে লাভ কী? প্রসঙ্গত, ২২ ডিসেম্বর কলকাতা মে়ডিক্যাল কলেজে ছাত্র সংসদের ভোট হওয়ার কথা জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। পরে তা স্থগিত রাখা হয়। তারই প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন পড়ুয়ারা। শুরু হয় অনশন। পাঁচ পড়ুয়া অনশনে বসেছেন। যদিও এর মধ্যে সোমবারই ঋতম মুখোপাধ্যায় নামে এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েন। অভিযোগ ওঠে, তাঁকে সেই সময় স্থানান্তরিত করার জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাম্বুল্যান্সও ছিল না হাসপাতালে। যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। মঙ্গলবার সকালে দেখা গেল অনশন মঞ্চের কাছে একটি অ্যাম্বুল্যান্স রাখা।