কলকাতা: চূড়ান্ত গাফিলতির। ফলস্বরূপ ভোগান্তি একরত্তি শিশুর। বারুইপুরের এক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ উঠল। সঙ্গে সরকারি হাসপাতালের (NRS Hospital) নিয়মের ফাঁস। আর তার জেরে মা পেলেন না তাঁর কোলের সন্তানকে। হোমে ঠাঁই হল শিশুর। গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৩৯ নাগাদ শিশুপুত্রের জন্ম দেন মা রুমা হালদার। জন্মের পর পরই ওই শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এরপরই বারুইপুরের ওই নার্সিংহোম থেকে শিশুপুত্রকে এনআরএসে স্থানান্তরিত করা হয়। অভিযোগ, রেফারের নথিতে শিশুপুত্রের জায়গায় শিশুকন্যা লেখা ছিল। আর তাতেই গন্ডগোলের সূত্রপাত হয়। শিশুপুত্রের কাগজে শিশুকন্যা লেখা থাকায় সদ্যজাতকে ‘আননোন’ হিসাবে ভর্তি করা হয় এনআরএস হাসপাতালে। এনসিইউ বিভাগে ওই শিশুকে রাখা হয়। এদিকে সদ্যোজাতের মা তখন বারুইপুরের নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। পুণেয় কাজ করেন বাবা। ছেলের জন্মের খবর পেয়ে বাড়ি ফিরলে প্রয়োজনীয় সব নথি জমা করা হয় হাসপাতালে। তবে তাতে কমেনি দুর্ভোগ।
ওই শিশুর পরিবারের লোকজনের দাবি, সোমবার এনআরএস কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, ‘আননোন বেবি’ হিসাবে ভর্তি হওয়া ওই শিশুকে চাইল্ড লাইনে পাঠানো হবে। এনআরএসের এমএসভিপি ইন্দিরা দে বলেন, “বাচ্চাটাকে আননোন বলে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীকালে আননোন বলে সিডব্লুসিতে জানানো হয়। তারা বাচ্চাটিকে নেওয়ার জন্য রাজি হয়। বাচ্চাটা এখন সুস্থ আছে, তারা বাচ্চাটিকে নিয়ে যাবে। এরইমধ্যে বাচ্চার বাবা বলে পরিচয় দিয়ে একজন আসেন। পরিচয়পত্রও দেখান। তবে সেটা সত্যি কি মিথ্যা যাচাই করবে সিডব্লুসি। ওখানেই তথ্য়প্রমাণ দিয়ে বাচ্চাটিকে নিতে হবে।”
ভুলের কথা মেনে নিয়েছে বারুইপুরের নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। সেই নার্সিংহোমের অ্যাডমিন ম্যানেজার সুদীপ্ত বিশ্বাস বলেন, “আমাদের দিক থেকে যেটা ভুল ছিল, সেটা মেলের জায়গায় ফিমেল ছিল। সেটা আমরা পরে ঠিক করে দিই।” কিন্তু সেই ভুলের মাশুল দিতে হচ্ছে হালদার পরিবারকে। ‘আননোন বেবি’ হিসাবে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় তাকে পেল না মা-বাবা।
ওই শিশুর বাবা স্বপন হালদার জানান, তাঁদের কাছ থেকে সিডব্লুসি আধার কার্ড নিয়েছে। সঙ্গে তাঁর বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির ঠিকানা। মোবাইল ফোন নম্বরও নিয়েছে। এক সপ্তাহ সময় চেয়েছে। এর মধ্যে ভেরিফিকেশন করবে। যদি সবকিছু সঠিক পাওয়া যায় তারপর বাচ্চাকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।