কলকাতা: পারিবারিক অশান্তির জেরে সাত বছরের শিশুকে কুয়োয় ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। আর সেই অভিযোগে মূল অভিযুক্ত শিশুরই জেঠু। রবিবার রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হইচই শুরু হয় হরিদেবপুর থানা এলাকার নালন্দা পার্ক এলাকায়। স্থানীয়রা জানান, বহুদিন ধরেই দুই ভাইয়ের ঝামেলা। মা-বাবাকে কে দেখবে তা নিয়েও দুই ছেলে ও ছেলের বৌয়ের মধ্যে অশান্তি। এরইমধ্যেই রাত রবিবার সাড়ে ৮টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। যদিও অভিযুক্তের পরিবার তা মানতে চাননি। অন্য কথা বলছেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, জমিজমা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিবাদ বেশ কয়েক বছর ধরে। এদিন সেই রাগেই নিজের ভাইপোকে সাপে ভর্তি কুয়োয় জেঠু ধাক্কা মেরে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। এরপরই চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয় এলাকায়। তবে সঙ্গে সঙ্গে সকলে ছুটে আসায় বড় বিপদ টলানো যায়।
স্থানীয়রা এসে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লেগেছে। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ জানিয়ে হরিদেবপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। হরিদেবপুর থানার পুলিশ এসে অভিযুক্তকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই।
আর্ষ রাজ কুমার নামে ওই শিশুর বাড়ির পাশেই থাকেন অমিত কুমারের পরিবার। অমিত বলেন, “কুয়োর মুখে মাঝেমধ্যে একটা ঢাকনা দেওয়া থাকে। এদিন সন্ধ্যায় ওই বাড়ির লোকজন খুব ঝগড়া করছিল। সে সময়ই কুয়োর মুখ খুলে ওই বাচ্চাটিকে ঠেলে ফেলে দেয় ওর জেঠু। শুনেছি ওদের জমি নিয়ে ঝামেলা। তা থেকেই এদিন এত কিছু। কুয়োটার মধ্যে সাপ রয়েছে।”
অভিযুক্তের স্ত্রী কবিতা রায় বলেন, “এই জমিটা আমার শ্বশুরবাড়ির। আমার দেওররা বাবা, মাকে দেখে না। আমাদের সঙ্গেও ঝগড়া করত। আমরা বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় থাকি। বাবা, মা জানালেন ওরা দেখেও না। বাড়ি ভাড়া দিতে দিচ্ছে না, কিছুই করছে না। তাই আমরা আসি। আমাদের সঙ্গে ওরা ঝগড়া শুরু করে। দেওরের বৌ আমার স্বামীকে লাঠি দিয়ে মারেও।”
কিন্তু কুয়োর ঢাকনা খোলার যে অভিযোগ? সে সম্পর্কে অভিযুক্তের স্ত্রী কবিতার দাবি, তাঁর স্বামী অন্য কাজে কুয়োর ঢাকনাটা খোলেন। সে সময় দেওরের স্ত্রী শিশুটিকে ওই কুয়োর ধারে এনে দাঁড় করিয়ে দেয়। তিনি বলেন, “অথচ লোকজনকে বলছে বাচ্চাকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। একেবারে মিথ্যা কথা। পুলিশ ডেকে আমার বরকে ফাঁসিয়ে দিল।” পুলিশ অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।