এসএসকেএমে আগুন (আগুন নেভার পরের ছবি)
কলকাতা: এসএসকেএমের (SSKM) জরুরি বিভাগ চত্বরে আগুন। এমার্জেন্সির ঠিক পাশে পুলিশ ফাঁড়ির অফিসের সামনে ফেসিলিটি কার্যালয়ে এই আগুন লাগে। ডিজিটাল এক্সরে, টিকিট কাউন্টার রয়েছে একতলায়। দোতলায় রেডিওলজি বিভাগ লাগোয়া চত্বরে একটি পিপিপি মডেলে ডায়গনিস্টিক সেন্টার চলে। তার সিটি স্ক্যানের জায়গা, সেখানেই আগুন লেগেছে বলে খবর। এখনও অবধি দমকলের ১০টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বলে খবর। শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লেগে থাকতে পারে বলে অনুমান। ঘটনার পরই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয় হাসপাতাল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অরূপ বিশ্বাস। এসএসকেএম শহরের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। কয়েক হাজার রোগী চিকিৎসাধীন এখানে। স্বভাবতই বৃহস্পতিবার রাতের এই আগুন লাগার ঘটনায় হইচই শুরু হয়ে যায় হাসপাতালচত্বরে। আতঙ্কে ছুটে আসেন রোগীর আত্মীয়রা। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের চোখে মুখেও উদ্বেগের ছাপ।
- হাসপাতালের যে জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে, সেটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। এই পুরো জায়গাটি এমার্জেন্সি বিল্ডিং নামে পরিচিত। যেখানে আগুন লেগেছে সেখানে কোনও ওয়ার্ড না থাকলেও, অনেকগুলি বিভাগ রয়েছে। চিন্তার বিষয় হল, এটি একদম বদ্ধ জায়গায়। ভবনটির একতলায় অনেক রোগীর আত্মীয়রা থাকেন। ভোর ৫টা ৬টা অবধি থাকেন তাঁরা।
- অরূপ বিশ্বাস বলেন, “আমরা উপরে গিয়েছিলাম। এখনও অবধি যা বুঝতে পারছি একটা স্ক্যান করার মেশিন থেকে আগুন লেগেছে। দমকল এসে নিয়ন্ত্রণে এনেছে। দমকল কাজ করছে। রোগী সরানোর ব্যাপার নেই । ওখানে রোগী নেই। “
- দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, “আমাদের ২টো ইঞ্জিন ওখানে থাকে। কাজ করে। আপাতত ৯টা ইঞ্জিন কাজ করছে। যেখানে আগুন লেগেছে আমাদের লোকেরা সেখানে ঢুকে গিয়েছে। খুবই ধোঁয়া। দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনাই। এখন আগুন নেভানোটাই প্রথম কাজ। কোনও লোক আটকে নেই। আমাদের ডিজিও যাচ্ছেন ওখানে।”
- এক রোগীর আত্মীয় বলেন, “আগুন লাগার সময় ভিতরে ছিলেন তিনি। পুলিশের হইহই শুনে বেরিয়ে আসি। কয়েক শো লোক ছিলাম একসঙ্গে। সকলেই ছুটে এলাম।”
- আরেক রোগীর আত্মীয়ের কথায়, “আমরা পাশেই প্রতীক্ষালয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখি ধোঁয়া ধেয়ে আসছে। এরপরই ছুটে বেরোই। কিছু পরেই দমকলের ইঞ্জিন এসে হাজির হয়।”
- এমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের নীচে অগ্নিনির্বাপণের জন্য কোনও ব্যবস্থা ছিল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
- সিটি স্ক্যান ও ইউএসজি মেশিন রুমে আগুন লাগে বলে দমকল সূত্রে খবর।
- ঘটনাস্থলে ১০টি ইঞ্জিন পৌঁছয়। ঘটনাস্থলে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
- রাতেই এসএসকেএমে যান কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি বলেন, “এসএসকেএমটা যদি কেউ চেনে তাঁর নাম মদন মিত্র। এসএসকেএম মানে এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এতটাই নজর নিউরো সার্জারির একজন রোগীর গায়ে একটা আঁচড়ও লাগেনি। সঙ্গে সঙ্গে সরানো হয়েছে। নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ভবনের আলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
- এসএসকেএমে যান রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তিনি বলেন, “আমাদের মন্ত্রী আছেন, স্বাস্থ্য সচিব আছেন, ডিজি ফায়ার সার্ভিসেস আছেন, ডিসি সাউথ আছেন। এখানে সিটি স্ক্যানের ঘর থেকে আগুন লাগে। মোটামুটি আগুন এখন পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে। কেউ ভিতরে নেই। কোনও আঘাত নেই, কোনও মৃত্যু নেই। এখন আগুন কেন লেগেছে তা ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে। ফায়ার ডিপার্টমেন্ট করবে। সেখান থেকেই আগুন লাগার কারণ জানা যাবে।”
- রাতেই হাসপাতালে আসেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। তিনি বলেন, “এখন আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। যেখানে আগুন লেগেছিল সেখানে শুক্রবার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা আসবেন। এরপরই বোঝা যাবে আগুন লাগার কারণ।”
- রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ এই আগুন লাগে বলে জানান নগরপাল বিনীত গোয়েল। দমকল দ্রুততার সঙ্গেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
- স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানান, কোনও সমস্যা হবে না। হাসপাতালে আরও তিনটে সিটি স্ক্যান মেশিন, চারটে এমআরআই মেশিন আছে। কারও কোনও সমস্যা হবে না।