কলকাতা: রাজ্যে এই প্রথমবার। ব্রেনডেথের (Brain Death) পর একই শরীরের হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, লিভার, দু’টি কিডনি এবং দু’টি কর্নিয়া সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাতজনের শরীরে প্রতিস্থাপন হতে চলেছে। পূর্ব ভারতে প্রথমবার এমন ঘটনার সাক্ষী রইল রাজ্য। পূর্ব বর্ধমানের হাটগোবিন্দপুরের বাসিন্দা ছিলেন হিরণ্ময় ঘোষাল (৫৪)। বর্ধমানে নাট্য়কর্মী হিসাবে পরিচিত মুখ তিনি। তাঁর শরীরেরই অঙ্গে নতুন জীবন পাবে একাধিক প্রাণ। শুক্রবার বেসরকারি হাসপাতালে চলছে অস্ত্রোপচার। হিরণ্ময়বাবুর দেহ থেকে অস্ত্রোপচার করে হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের (Organ Donation) জন্য নিয়ে যাওয়া হবে।
হিরন্ময়বাবুর ভাই বিপ্লব ঘোষাল বলেন, “বুধবার দুপুরে ভাত খাওয়ার পর ঘরে একাই ছিল দাদা। হঠাৎই অজ্ঞান হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাই। স্ক্যান করে দেখা যায় ব্রেনে রক্ত জমে গিয়েছে। এরপরই কলকাতার এক সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ডাক্তারবাবুরা জানান, সার্জারি করার মতো অবস্থা নেই। লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে রাখেন। পরদিনই জানতে পারি ব্রেন ডেথ হয়ে গিয়েছে। এরপরই আমরা সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিই অঙ্গদান করা হবে। কারণ, এই অঙ্গদানের মধ্যে দিয়েই দাদা অন্য শরীরে থাকবে। এভাবে কত মানুষের প্রাণ বাঁচবে।”
ROTO সূত্রে খবর, চারটি গ্রিন করিডর করা হচ্ছে। সকালেই চেন্নাই থেকে এসেছে বিশেষ বিমানে। সেই বিমানে হিরণ্ময়বাবুর ফুসফুস নিয়ে যাওয়া হবে চেন্নাইয়ে। গ্রিন করিডরে তা নিয়ে যাওয়া হবে বিমানবন্দর অবধি। অন্যদিকে গ্রিন করিডর করে শহরের আরও একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে কিডনি। পরপর দু’বার গ্রিন করিডর করে এসএসকেএম হাসপাতালে যাবে লিভার ও একটি কিডনি। এছাড়া কর্নিয়া নিয়ে যাওয়া হবে শঙ্কর নেত্রালয়ে।
বেসরকারি হাসপাতালে হিরণ্ময়বাবুর চিকিৎসক ছিলেন নিউরো সার্জেন সুনন্দন বসু। তিনি বলেন, “বাঁচাতে পারিনি সেই আক্ষেপ ছিল। এখন পাঁচটা মূল অঙ্গ পাঁচজন মানুষকে জীবন দেবে এই উদাহরণ তৈরি করল হিরণ্ময়ের পরিবার।” সমস্ত ভুল ধারণাকে দূরে ঠেলে এভাবেই সকল পরিবার এগিয়ে আসুক, এভাবেই প্রিয়জন বেঁচে থাকুন অন্যের শরীরে, চান শহরের এই চিকিৎসক।