কলকাতা: কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘নীতি পুলিশি’র অভিযোগ ঘিরে গত কয়েকদিনে জোর তরজা শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে (Presidency University)। প্রতিবাদে ময়দানে নামছে পড়ুয়ারা। তাঁদের বক্তব্য, অকারণে ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসজুড়ে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের একসঙ্গে দেখলেই ডেকে পাঠানো হচ্ছে অভিভাবকদেরও। সোমবার প্রেসিডেন্সির গেটে প্রতিবাদে শামিল হন এসএফআইয়ের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, ছাত্র-ছাত্রীদের আচরণকে নজরবন্দি করে তাদের সামাজিক বিধি নিষেধের মধ্যে ফেলার চেষ্টা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর এতেই চরম আপত্তি রয়েছে ছাত্র ছাত্রীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে যে সমস্ত বিধিনিষেধের কথা বলা হয়েছে, তাতে একাধিক বিষয়ের উল্লেখ করে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ডেপুটেশন জমা দিতে চলেছেন ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের দাবি যদি না মানা হয়, আগামিদিনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তাঁরা।
গত শুক্রবার বিতর্কের সূত্রপাত। পড়ুয়ারা অভিযোগ তোলেন, কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফতোয়া জারি করছে। তারা আচরণবিধির একটি খসড়া তৈরি করেছে। যেখানে একাধিক বিধিনিষেধের উল্লেখ রয়েছে বলে অভিযোগ। পড়ুয়াদের দাবি, ওই খসড়ায় বলা হয়, ক্যাম্পাসে মিটিং-মিছিল আয়োজন করার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নিতে হবে, ক্যাম্পাসে কোনওরকম স্লোগান দেওয়া যাবে না, চলবে না চিৎকারও।
এমনকী কোনও ভিডিয়ো সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দেওয়ার আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে বলেও খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে বলে পড়ুয়াদের দাবি। এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় সার্ভিল্যান্সের জন্য বসেছে ক্যামেরা। বিশেষ করে যেসব জায়গায় ছাত্র ছাত্রীদের আড্ডা হয়, লাভার্স লেনে বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এমনকী এইসব ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হচ্ছে ‘গার্জিয়ান কল’ও।
ছাত্র ছাত্রীদের বক্তব্য প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাস মুক্তচিন্তার ক্যাম্পাস। সেখানে এরকম ঘটনা কেন ঘটবে? তারই রেশ ধরে কোড অব কন্ডাক্টের খসড়া বাতিলের দাবি তোলেন পড়ুয়ারা। শুধু তাই নয়, পাল্টা পড়ুয়ারাও আচরণবিধি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁরা বলছেন, সংবিধানে যেসব কাজের বাধা নেই, কর্তৃপক্ষ চাপ দিলেও তা তাঁরা মানবেন না। গণতন্ত্র বজায় রাখতে হবে। একতরফা কোনওভাবে কোনও সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় নিতে পারবে না বলেও পড়ুয়াদের আচরণবিধিতে উল্লেখ আছে। যদিও কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকেই তাদের বক্তব্যে অনড়। জানিয়েছে, কোনও নীতিপুলিশি তারা করছে না। ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবকদের কাউন্সেলিংয়ের জন্য ডাকা হয়েছিল।