কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে বিক্ষোভ।
কলকাতা: ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবি ঘিরে উত্তাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ (Medical College Kolkata)। সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাতভর ঘেরাও করে রাখা হয়েছে অধ্যক্ষ এবং বিভাগীয় প্রধানদের। মেডিক্যাল ছাত্র অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে তারা। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সদর্থক উদ্যোগ নজরে আসেনি। ২২ ডিসেম্বর ভোটের দিন ঠিক হলেও তা নিয়ে চূড়ান্ত নিশ্চয়তা পাননি ডাক্তারি পড়ুয়ারা। এরপরই সোমবার থেকে এই পরিস্থিত। পড়ুয়াদের দাবি, ২০১৬ সালে শেষবার ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে। তারপর আর ভোট হয়নি। ছাত্রদের অভিযোগ, আগামী ২২ ডিসেম্বর ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সোমবার হঠাৎই কোনও কারণ ছাড়া জানানো হয় এই ভোট হচ্ছে না। তারপর থেকেই উত্তপ্ত হতে শুরু করে পরিস্থিতি। প্রিন্সিপালের ঘরের সামনে বিক্ষোভে বসেন ডাক্তারি পডুয়ারা। এদিকে ছাত্র বিক্ষোভে যখন উত্তাল মেডিক্যাল কলেজ চত্বর, তখন ময়দানে নার্সিং স্টাফরাও। ঘেরাওয়ে আটকে রয়েছেন নার্সিং সুপার শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী। তাঁকে ছাড়ার দাবিতে পাল্টা সরব বিভিন্ন ওয়ার্ডের নার্সিং স্টাফ।
- ৩০ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কলকাতা মেডিক্যাল হাসপাতালের বিশৃঙ্খলা কাটল না। এখনও ঘেরা হয়ে রয়েছেন হাসপাতালের সুপার সহ বিভাগীয় প্রধানেরা। তবে চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে।
- কলকাতা মেডিক্যাল হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা অবস্থার ঘটনায় মামলা দায়ের হল হাইকোর্টে। এক রোগীর পরিজন মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের বিরুদ্ধেও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে।
- রাতভোর ঘেরাওয়ের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ফরেন্সিক ও কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান।
- সেন্ট্রাল ল্যাব খুললেও রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার রোগীর পরিজনেরা। স্থগিত অস্ত্রোপচার।
- সকাল থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সেন্ট্রাল ল্যাব বন্ধ। ভোর থেকে রোগী ও রোগীর পরিজনেরা ল্যাবের সামনে দাঁড়িয়েও পরিষেবা না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একেবারে গেটের তালা ভাঙা ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। বেগতিক বুঝে বেলার দিকে ল্যাব খোলার বন্দোবস্ত করা হয়।
- ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই ল্যাব বন্ধ ছিল বলে দাবি মেডিক্যাল চিকিৎসকের। যদিও কার নির্দেশে ল্যাব বন্ধ ছিল তা জানেন না বলে দাবি ওই চিকিৎসকের। তবে ল্যাব খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
- নার্সিং স্টাফরা এদিন বলেন, “আমাদের ম্যাডামকে ছেড়ে দিতে হবে, নার্সিং সুপারকে ছেড়ে দিতে হবে। ম্যাডাম ডাক্তারদের চ্যানেলে পড়েন না। ওনাকে আটকে রাখা অনৈতিক। না হলে হাসপাতাল আজকে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।”
- আপাতত ওয়ার্ডে একজন করে নার্সিং স্টাফ রেখে তাঁরা নিজেদের দাবি জানাতে এসেছেন। তবে নার্সিং সুপারকে ঘেরাও মুক্ত না করা হলে পরিস্থিতি যে খারাপের দিকেই যাবে নার্সিং স্টাফদের বক্তব্যে সে ইঙ্গিতই মিলেছে। আর এই দুর্ভোগের ফল যে বইতে হবে সাধারণ মানুষ, চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের সে কথা বলাই যায়।
- যে করিডরে সোমবার রাত থেকে ছাত্ররা অবস্থানে বসেন, এদিন সকালে সেখানে গিয়ে বসে পড়েন নার্সদের একাংশ। দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও শুরু হয়। যদিও আন্দোলনকারী ছাত্রদের বক্তব্য, নার্সিং সুপারকে তাঁরা ছেড়ে দিতে রাজি। কিন্তু নার্সিং সুপার নিজেই যেতে চাইছেন না। ঘেরাও হয়ে থাকা চিকিৎসকদের জন্য সকালেই নিয়ে যাওয়া হয় প্রেশার মাপার যন্ত্র, স্টেথোস্কোপ।
- এদিকে আন্দোলনকারী ছাত্রদের দাবি, ছাত্র নির্বাচন বন্ধ রেখে বাইরে থেকে রাজনৈতিক দল প্রভাব খাটাবে তা চলবে না। ছাত্রদের জন্য অ্যাসোসিয়েশন আছে। তারাই দায়িত্ব পাক।
- মেডিকেল কলেজ ঘেরাও এর জেরে সমস্যা। ঘেরাও তুলে রোগীর পরিজনদের হাসপাতালে প্রবেশ করতে দেওয়া হোক। ঘেরাও জেরে সমস্যায় রোগীর পরিজনরা। পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হোক, আবেদন এক রোগীর আত্মীয়ের। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার মামলা দায়ের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে। বুধবার শুনানির সম্ভাবনা।