কলকাতা: জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ অবধি পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayet Vote) বিজ্ঞপ্তি নয়। ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটের কোনও বিজ্ঞপ্তি রাজ্য নির্বাচন কমিশন জারি করবে না বলেই নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত শুভেন্দু অধিকারীর দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। আদালত নির্দেশ দেয়, আদালত আশা করে যে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভোট সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করবে না। পঞ্চায়েত ভোটের আগে আসন সংরক্ষণের কাজ চলছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন গত মাসেই সংরক্ষণ সংক্রান্ত একটি খসড়া তালিকাও প্রকাশ করে। সেই তালিকা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ ছিল, কোনও সমীক্ষা ছাড়াই এই ধরনের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। নিয়ম মেনে এই তালিকা তৈরি হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। সেই মামলার শুনানি ছিল এদিন।
২০২৩ সালে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। গ্রামপঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের প্রতিনিধি নির্বাচনে এই ভোট ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট শাসকদলের কাছে যেমন শক্তি পরখের জায়গা, একইভাবে প্রধান বিরোধী বিজেপির শক্তি মেপে নেওয়ার একটা পর্ব হতে চলেছে। পঞ্চায়েত ভোটের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই করবে বাম-কংগ্রেসও। কারণ, এই মুহূর্তে এই দুই দল বিধানসভায় শূন্য। পঞ্চায়েত স্তর থেকেই তাই নতুন করে অক্সিজেন খুঁজবে তারা। তবে এই ভোটের আগে ইতিমধ্যেই নানা আইনি জট শুরু। বিরোধী দলনেতার মামলা ইতিমধ্যেই আদালতের নজরে।
২৯ জুলাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজ্য পিছিয়ে পড়া জনজাতির জনসংখ্যা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত জানায়। এর উপর ভিত্তি করে নির্বাচনের আগে সংরক্ষণের কাজ করা হয়।। সেই বিজ্ঞপ্তি ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু। কোথাও সেন্সাস, কোথাও সার্ভে কেন? অভিযোগ ওঠে, নিয়ম অনুসারে সেন্সাস যখন ২০১১ সালে হয়, সেইসময় এসসি, এসটি নিয়ে আলাদা সুমারি হলেও ওবিসি নিয়ে আলাদা হয়নি। তাই সার্ভে করে ওবিসি জনসংখ্যা নির্ধারণ করে কমিশন।
রাজ্যের প্রশ্ন ছিল, যখন পদ সংরক্ষণের কাজ চলছে, তখন কেন এই মামলা? প্রধান বিচারপতি সওয়াল-জবাব শেষে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন, আপাতত ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনও নির্বাচন ঘোষণা করা যাবে না। যদিও কমিশনসূত্রে খবর, পদ সংরক্ষণের অন্তত ৪২ দিন আগে ভোট করা যায় না। ফলে জানুয়ারিতে ভোট ঘোষণা করা যেত না। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ইংরাজির নতুন বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। আদালত মনে করছে, ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত আদালত ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটের কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করবে না।