Winter Update: ২০১৫-পর ‘উষ্ণতম’ বর্ষবরণ! পশ্চিমী ঝঞ্ঝার গেরো কাটিয়ে জাঁকিয়ে শীত কবে?

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Jan 01, 2023 | 10:01 PM

Weather: কলকাতায় চলতি মরসুমে শীতলতম দিন ছিল ১৭ ডিসেম্বর। পারদ নামে ১৩.২ ডিগ্রিতে। এ যেন সান্ত্বনার শীত।

Winter Update: ২০১৫-পর ‘উষ্ণতম’ বর্ষবরণ! পশ্চিমী ঝঞ্ঝার গেরো কাটিয়ে জাঁকিয়ে শীত কবে?
কুয়াশা ঘিরছে, তবে সে অর্থে শীতের দেখা নেই।

Follow Us

কমলেশ চৌধুরী

৭ বছরের মধ্যে ‘উষ্ণতম’ বড়দিন। ৫৩ বছরের মধ্যে ‘উষ্ণতম’ ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধ। ৮ বছরের মধ্যে ‘উষ্ণতম’ বর্ষবরণ! হঠাত্‍ দেখলে বোঝা মুশকিল, তথ্যগুলো গ্রীষ্মের না শীতের! অথচ কলকাতার এই ধাঁধা লাগানো তথ্যগুলিই থেকে যাবে আবহাওয়া দফতরের দস্তাবেজে। এ বার শীতে প্রকৃতির এমনই খামখেয়ালির সাক্ষী বাংলা। গ্রীষ্মে নিয়ম করে তাপপ্রবাহের মুখোমুখি হয় রাজ্য। শর্ত, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চল্লিশ ছুঁতে হবে আর স্বাভাবিকের পাঁচ ডিগ্রি উপরে উঠতে হবে। লু-র দাপটে এই শর্ত ফি বছর পূরণ হয়ে যায়। কিন্তু শীতে শৈত্যপ্রবাহ যেন অলীক কল্পনা হয়ে দাঁড়াচ্ছে! শর্ত হল, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দশের নীচে নামতে হবে আর হতে হবে স্বাভাবিকের পাঁচ ডিগ্রি কম। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার এমনই নজির, এ বার ডিসেম্বরে একদিনও শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েনি বাংলা। বাঁকুড়া, পানাগড়, পুরুলিয়া বা শ্রীনিকেতনের মতো শীতের চেনা ঠিকানাও নয়।

বঙ্গবাসীর এমনই কপাল, ডিসেম্বরের ‘উষ্ণতা’র ব্যাটন হাতে নিয়েই ক্যালেন্ডারে পা রাখল জানুয়ারি। পয়লা দিনেই শীত গায়েব! আলিপুরে তাপমাত্রা চড়ল ১৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ ডিগ্রি বেশি। অঙ্কের হিসেবে, বড়দিনের চেয়েও ‘উষ্ণ’ বর্ষবরণ। ২৫ ডিসেম্বর কলকাতার তাপমাত্রা ছিল ১৭.২ ডিগ্রি।

এমন ‘উষ্ণ’ বর্ষবরণ শেষ কবে দেখেছে কলকাতা?

আবহাওয়া দফতরের তথ্য, ২০১৫ সালের পর এবারই প্রথম। অর্থাত্‍, আট বছরের মধ্যে উষ্ণতম বর্ষবরণ কলকাতায়। বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের প্রভাবে ২০১৫ সালের পয়লা জানুয়ারি পারদ উঠেছিল ১৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। পরে তা একুশেও পৌঁছে যায়। এ বছর কাঁটা ভূমধ্যসাগরের পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। ঝঞ্ঝা এলে উত্তুরে হাওয়া দুর্বল হয়, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

ঝঞ্ঝা গেলে কি জাঁকিয়ে শীত পড়বে?

ঝঞ্ঝার গেরো থেকে মুক্তি পেয়েছে উত্তর ভারত। বর্ষবরণের সকালেই এক লাফে ৫ ডিগ্রি পারাপতন হয়েছে দিল্লিতে। ৪ জানুয়ারি ৪ ডিগ্রিতেও নেমে যেতে পারে রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। দিল্লির বরাদ্দ কি জুটবে না বাংলার? কিছুটা আশার খবর শোনাচ্ছেন মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘৪ জানুয়ারির পর থেকে তাপমাত্রা কমবে। তার পর কিছু দিন ঠান্ডা আমেজ থাকবে।’ জাঁকিয়ে শীত কি পড়বে? সঞ্জীববাবুর মন্তব্য, “পশ্চিমাঞ্চলের তাপমাত্রা ৯-১০ ডিগ্রিতে নামতে পারে। কলকাতায় বড়জোর ১৩ ডিগ্রিতে নামার সম্ভাবনা। তার বেশি ঠান্ডা পড়ার ইঙ্গিত এখনও পর্যন্ত নেই।”

কলকাতায় চলতি মরসুমে শীতলতম দিন ছিল ১৭ ডিসেম্বর। পারদ নামে ১৩.২ ডিগ্রিতে। এ যেন সান্ত্বনার শীত। শেষ বার ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ১০ ডিগ্রিতে নেমেছিল কলকাতার পারদ। জানুয়ারিতে ৯ ডিগ্রির ঠান্ডা শেষ বার কলকাতা পেয়েছিল ২০১৩ সালে। মানে পাক্কা ১০ বছর আগে। এসব কি তাহলে অতীতের খাতাতেই থেকে যাবে? দায়ী কি বিশ্ব উষ্ণায়ন? সঞ্জীববাবুর মন্তব্য, ‘যদি বহু বছরের তথ্য দেখা যায়, তাহলে বলা যায়, সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড় বাড়ছে। অর্থাত্‍, রাতের ঠান্ডার দাপট একটু একটু করে কমছে। কিন্তু শেষ কয়েক বছরের তথ্য দেখে জলবায়ু পরিবর্তনের ঘাড়ে গোটা দায় চাপিয়ে দেওয়া মুশকিল। এ বার যেমন উষ্ণ বর্ষবরণ হল, ২০১৯, ২০২০ সালেই আবার ১২ ডিগ্রির ঠান্ডা পেয়েছে কলকাতা। মানে ২-৩ বছর আগেই।’ অর্থাত্‍, খামখেয়ালিপনা বাড়ছে। এটাও তো জলবায়ু পরিবর্তনেরই দান! রেহাই নেই, স্পষ্ট দেওয়াল লিখন।

Next Article