দু’বছর কোভিডের ধাক্কা সামাল দিতে দিতেই ক্লান্ত রাজ্যবাসী। এরইমধ্যে ২০২২ সালের পুজোর ঠিক আগে আগে এ রাজ্যে মাথাচাড়া দিতে শুরু করে নতুন বিপদ, ডেঙ্গি। মশাবাহিত এই রোগের দাপটে কার্যত পর্যুদস্ত হয়েছে জনজীবন। কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় মারণ হুমকি হয়ে ওঠে ডেঙ্গি। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গির যা চিত্র তা যথেষ্ট উদ্বেগের।
২০১৯ সালকে ডেঙ্গির ‘আউটব্রেক’ বছর হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু ২০২২ সালে ডেঙ্গির চিত্রটা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে ২০১৯ সালকে। ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সংখ্যাটাও নেহাত কম নয় ২০২২-এ। বিভিন্ন বয়সীর মৃত্যুর খবর এসেছে। ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর মাল্টি অর্গান ফেলিওর হওয়া বা হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুরুতে ডেং-৩ ধরা পড়লেও, পরের দিকে দাপট দেখিয়েছে ডেং-২। ডেঙ্গির অন্যতম ভয়াবহ স্ট্রেন এটি।
পুজোর আগে থেকেই ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছিল রাজ্যে। বর্ষা কেটে গেলেও ডেঙ্গির দাপাদাপি কমেনি। উৎসবে শেষ হতে জমে থাকা আবর্জনায় ডেঙ্গির লার্ভা তৈরি হওয়ার প্রবণতা বাড়ে আরও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে বলতে শোনা গিয়েছিল, শীত পড়তে শুরু করলে ডেঙ্গির প্রকোপও কমতে থাকবে। যদিও রাজ্যের বিরোধীরা সরব হয়, রাজ্য সরকারের নজরদারি এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণেই এভাবে ডেঙ্গির দাপট বেড়েছে।
যদিও স্বাস্থ্যভবন জেলা-ব্লক-মহকুমা হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, অ্যাডিশনাল সুপার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সকলকেই প্রতি মুহূর্তে সতর্ক থাকা নির্দেশ দিয়েছিল। পুজোর সময় ছুটিও বাতিল হয়। তবে ডিসেম্বর পড়তে স্তিমিত হয়েছে ডেঙ্গির দাপাদাপি। তবে শীতের মরসুমেও ডেঙ্গি যে পুরোপুরি উধাও, তা বলা যাচ্ছে না। কলকাতা পুরনিগম ডিসেম্বরের শুরুতে একটি জরুরি বৈঠক করে। তাতে উঠে আসে নতুন তথ্য। ডেঙ্গি বহনকারী মশা তাদের বাসস্থান বদলেছে। ঘিঞ্জি এলাকার বদলে ফাঁকা জায়গায় লার্ভা জন্মাচ্ছে।