কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে। অন্যদিকে গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল সিবিআই হেফাজতে। তাঁর বিরুদ্ধেও নানা তথ্যপ্রমাণ তদন্তকারীদের হাতে উঠে আসছে বলে সূত্রের খবর। এসবের মধ্যেই রবিবার বেহালায় প্রাক স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে দলীয় কর্মীদের রাস্তায় নামার মন্ত্র দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইন আইনের মতে চলুক, তাতে কোনও আপত্তি নেই, স্পষ্ট জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে সংগঠনকে কোনওভাবেই নড়বড়ে হতে দিতে নারাজ দলনেত্রী। এদিনের অনুষ্ঠান থেকে বেঁধে দিলেন সেই সুর। একইসঙ্গে বললেন, “কেউ ভয় পাবেন না, দুর্বল হবেন না।” আগামী ১৬ অগস্ট তৃণমূলের ‘খেলা হবে’ দিবস। এই দিনকে সামনে রেখেই রাস্তায় নামার নির্দেশ দিলেন তিনি।
এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দেখুন ব্যক্তিগতভাবে কে কী করছে সব খবর রাখা সম্ভব নয়। যদি ইনডিভিজুয়াল কেউ কোনও অন্যায় করে থাকে, ব্যবস্থা হোক। কিন্তু তার মানে এটা হয় ডোর টু ডোর, মধ্যরাতে কার ঘরে ঢুকে যাবে, আতঙ্কে কাঁপছে।” একইসঙ্গে জমায়েতের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, “কী ভয় লাগছে? কাল যদি আমার বাড়িতে যায় আপনারা কী করবেন? রাস্তায় নামবেন তো? গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করবেন তো? আমারটা আমি একাই লড়ে নেব। কিন্তু আপনাদেরটা আপনাদের লড়ে নিতে হবে তো? যদি আমার কোনও সহকর্মীকে ইচ্ছা করে জেলে ধরে রেখে দেয়, কী বলছে এখন না গরুর টাকা নিয়েছে। গরুটা কোথা থেকে আসে। উত্তরপ্রদেশ থেকে কেন তুমি গরু পাঠাও বাংলা দিয়ে? বিহার থেকে তুমি কেন গরু পাঠাও বাংলা দিয়ে? আমি অনেকবার বলেছি আমাদের বর্ডারে আমরা ঢুকতে দেব না। গরু দেখার দায়িত্ব বিএসএফের।”
তৃণমূল সুপ্রিমোর দাবি, ভোটবাক্সে লাভের গুড় দেখতে না পেয়ে বিজেপি অন্য পথে হাঁটছে। মমতা বলেন, “এমনি জিততে পারবে না। ববিকে অ্যারেস্ট কর, অরূপকে অ্যারেস্ট কর, মালাকে অ্যারেস্ট কর, শুভাশিসকে অ্যারেস্ট কর, কেষ্টকে অ্যারেস্ট কর…। আমি বলি কবে কবে অ্যারেস্ট করবে বল না নামগুলো। আমি দরকার হলে আমার সব সহকর্মীদের নিয়ে জেল ভরো আন্দোলনের ডাক দেব। এসো, দেখি কত জেল তোমার আছে।”
এদিন দলীয় কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তায় নামতে হবে। রাস্তাই আমাদের রাস্তা দেখাবে। তাই নতুন করে আরেকটা রাজনৈতিক যুদ্ধ শুরু হবে। সেই যুদ্ধটা হবে খেলা হবে দিবস থেকে। খেলা হবে, সকলে খেলা হবে দিবসে অংশগ্রহণও করবেন। একটু খেলাধূলা করবেন। খেলতে খেলতে রাস্তায় মিছিল করুন না ভাল লাগবে। ব্লকে ব্লকে ক্লাবগুলোকে সাহায্য করা হচ্ছে। সেটা তো প্রতীকী। কিন্তু আমার কর্মসূচি ১৬ তারিখ থেকে শুরু হবে।” ১৬ অগস্ট থেকে পর পর কর্মসূচির ডাক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২২ অগস্ট পুজোর মিটিং রয়েছে। ২৯ অগস্ট ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান। ১ সেপ্টেম্বর পুজোর শোভাযাত্রা। ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। ৮ অগস্ট নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে বুথস্তরের বৈঠক।
আরও পড়ুন: 19,867.8 MHz স্পেকট্রাম অধিগ্রহণ করে ভারতীয়দের জন্য 5G বিপ্লব ঘটাতে চলেছে এয়ারটেল