কলকাতা: সাক্ষী হিসাবে ডেকে নিয়ে গিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে তো বটেই, আগেও বহুবার দেখা গিয়েছে। এবার কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারীকে সাক্ষী হিসাবে ৩ ঘণ্টার বেশি সময় জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না সিবিআই। একইসঙ্গে সাক্ষী হিসাবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে ৭২ ঘণ্টা আগে নোটিস দিতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই নির্দেশ নিঃসন্দেহে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
প্রসঙ্গত, বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার একটি মামলায় তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারীকে এর আগে নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে সমন পাঠানো হয়েছে। পাল্টা তিনিও সময় চেয়ে নেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে। অন্যদিকে এই মামলায় তাঁর বাড়িতে সম্প্রতি অভিযানও চালায় সিবিআই। তাঁর নিরাপত্তারক্ষী, আপ্তসহায়ক, গাড়ির চালককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় সিজিও কমপ্লেক্সে। এরপরই এই জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন সুবোধ।
সিবিআই তাঁর কাছে যে নথি তলব করেছে, তা দেওয়ার জন্য সময় চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ জেরা সংক্রান্ত বিষয়েও আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এদিন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সুবোধ অধিকারীকে সমস্ত নথি সিবিআইয়ের কাছে জমা দিতে হবে। এই সময়ের মধ্যে তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না। একইসঙ্গে অভিযুক্ত হিসাবে তলব করলে সিবিআইকে ১০ দিন আগে নোটিস দিতে হবে। সেই ১০ দিনের মধ্যে তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না।
সুবোধ অধিকারীর আইনজীবী ছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনজীবী তথা শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এর আগে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বা মদন মিত্রদের ক্ষেত্রে সাক্ষী হিসাবে ডেকে নিয়ে গিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে গ্রেফতারের পথ নিয়েছে সিবিআই। সেই প্রবণতা এবার বন্ধ হবে বলে দাবি কল্যাণের। প্রসঙ্গত, এক চিটফান্ড মামলায় হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানির বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার ও তাঁকে গ্রেফতারের পর গত ৪ সেপ্টেম্বর বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। অভিযান চলে তাঁর ভাইয়ের বাড়িতেও। হালিশহরের জেঠিয়ায় কমল অধিকারীর ফ্ল্যাটে, হালিশহর মঙ্গলদীপ, হালিশহর জেঠিয়ায় সুবোধ অধিকারীর পৈত্রিক বাড়িতে তল্লাশি চলে সেদিন।