কলকাতা: রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে গুচ্ছ গুচ্ছ হিংসার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বাংলা জুড়ে হানাহানির খবরের মাঝে কমিশনার রাজীব সিনহার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, রাজ্যের শাসকমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কমিশন কি দায়ী? মন্ত্রী বলেন, “শুধু কমিশন কমিশন করলে হবে না। এটা একটা বৃহত্তর চক্রান্ত।” কিছুটা সংবাদমাধ্যমকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করান তিনি। তিনি বলেন, “আমি বারবার বলছি, আপনারা দেখাবেন না ঠিক মতো। যাঁরা উস্কানি দিচ্ছেন, তাঁদের চক্রান্ত। যাঁরা বাংলাকে বদনাম করতে চায়, তাঁদের চক্রান্ত।”
গত শনিবার ভোটের শুরু থেকে অশান্তির খবর আসছিল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। কমিশন দফতরে দেখা মিলছিল না কমিশনারের। বাংলাজুড়ে হানাহানি চলছিল। দিকে দিকে খুন-বোমা-গুলি। থামছিল না রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরের ফোন। কোথায় কেন্দ্রীয় বাহিনী? উঠছিল একাধিক প্রশ্ন। ফোনের বন্যায় বিপর্যস্ত কন্ট্রোলরুমের আধিকারিকরা। শুধু রিপোর্ট তলব কেন? কমিশনের পদক্ষেপ কোথায়? প্রশ্ন উঠেছিল ভোটার থেকে সাধারণ রাজনৈতিক কর্মীদের।
এরপর যত সময় এগিয়েছে, তখনই অশান্তিতে, খুনোখুনি, রক্তে তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলা। দু’ঘণ্টা পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে এসেছিলেন। কিন্তু তার আগেই সামনে এসেছে শাসকদলের বক্তব্য। শাসকদলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করেন, “রাজ্যে ৬১ হাজার বুথ। তার মধ্যে কেবল ৪৬টি বুথ থেকে অশান্তির আসছে। কিন্তু সেই সব ছোট ঘটনাকেই বড় করে দেখানো হচ্ছে।” অর্থাৎ সেক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের ঘাড়ে দোষ ঠেলেছিলেন শাসকমন্ত্রী।
শনিবার যখন এসব বক্তব্য রাখছেন শাসকমন্ত্রীরা, তখন এমনও সময় আসে, যখন ১০ মিনিটের ব্যবধানে দুটি খুনের ঘটনা সামনে আসে। নির্বাচনের এক দিনের খুন হয়েছিলেন ১৮ জন। যদিও কমিশনের মতে, সংখ্যা ৭।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার সমস্ত দায় কমিশনকেই দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি বলেন, “আপনি আপনার দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আগুন ও রক্ত নিয়ে রীতিমতো খেলা চলছে। এত হিংসার জন্য দায় কার?” কিন্তু শাসকদল অবশ্য কমিশনের দোষ সে অর্থে দেখতে পাচ্ছে না। ফিরহাদ হাকিম আগেই বলেছিলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী করে তো এত লাফানো হয়েছিল। তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনী কী করল?” তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফ থেকেও পাল্টা বলা হয়, স্পর্শকাতর বুথগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী যে মোতায়েন করা হবে, সেক্ষেত্রে কটা এরকম বুথ রয়েছে, তা কমিশনের তরফ থেকে সঠিকভাবে বলাই হয়নি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে।